23.3 C
London
July 4, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীরা ২৪ গুণ বেশি অপরাধে জড়িতঃ কনজারভেটিভ পার্টি গবেষণা

যুক্তরাজ্যে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অবৈধ অভিবাসীরা গড় ব্রিটিশ নাগরিকের তুলনায় ২৪ গুণ বেশি কারাগারে যেতে পারেন—এমনটাই দাবি করেছে কনজারভেটিভ পার্টির সাম্প্রতিক এক গবেষণা। এতে বলা হয়েছে, যেসব অভিবাসী ছোট নৌকায় ফ্রান্স থেকে বিপজ্জনক পথে ইউকে-তে প্রবেশ করছেন, তাদের মধ্যে সোমালিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, আলবেনিয়া ও ইরানের নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত।

গবেষণায় বলা হয়, ২০২৫ সালে চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ৩.৪ শতাংশের জেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ব্রিটিশ নাগরিকদের তুলনায় ২৪ গুণ এবং অন্যান্য পথেই আসা অভিবাসীদের তুলনায় ১৮ গুণ বেশি। এই গবেষণা ভিত্তি করে কনজারভেটিভ পার্টি দাবি করেছে—বর্তমান সরকার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এবং জনগণের নিরাপত্তা হুমকির মুখে।

সোমালিয়ান পাসপোর্টধারীদের মধ্যে প্রায় ১২ শতাংশ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের কারাগারে রয়েছেন। একইভাবে, আলবেনিয়ানদের মধ্যে ৬ শতাংশ, ইরাকি নাগরিকদের ২.৭ শতাংশ এবং ইরানিয়ানদের ১.৬ শতাংশ জেলে। অথচ দেশের মোট বিদেশি পাসপোর্টধারীদের মধ্যে কারাবরণকারী মানুষের হার মাত্র ০.১৮ শতাংশ।

ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, “চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীরা যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রবেশ করছে। তারা অপরিচিত এবং অধিক হারে গুরুতর অপরাধে জড়িত হচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

তিনি অবিলম্বে আদালতের প্রক্রিয়া ছাড়া ইউরোপের বাইরে অভিবাসীদের পাঠানোর দাবি তোলেন। তার মতে, অস্ট্রেলিয়ার মডেল অনুসরণ করে অভিবাসন ঠেকানো সম্ভব, আর রোয়ান্ডা পরিকল্পনা বাতিল করে লেবার সরকার জনগণকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

তবে হোম অফিস এই গবেষণার সমালোচনা করে বলেছে, চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের সঙ্গে সাধারণ বিদেশি অপরাধীদের তুলনা করা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল। এক মুখপাত্র বলেন, “এই দুটি ভিন্ন গোষ্ঠী, তাই তাদের মধ্যে সরাসরি তুলনা করা অনুচিত।”

হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবারই আটটি নৌকায় করে ৪৪০ অভিবাসী যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন। ফলে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই মোট ২০,৪২২ জন চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন—যা গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৭৯ শতাংশ বেশি।

প্রথমবারের মতো বছরের এই সময়েই ২০,০০০–এর মাইলফলক স্পর্শ করেছে যুক্তরাজ্য। আগের বছরগুলোতে এই সংখ্যা আগস্টের পর পৌঁছাত। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য বড় ধরনের চাপ তৈরি করছে।

ক্যাবিনেট মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “সবাই জানে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করে সংখ্যা কমাতে হবে।” সরকারের ভেতর থেকেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অভিবাসন এখন কেবল মানবিক নয়, বরং আইনশৃঙ্খলার বিষয়েও পরিণত হয়েছে—এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে সাম্প্রতিক বিতর্ক ও পরিসংখ্যান।

সূত্রঃ এক্সপ্রেস

এম.কে
০৪ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রিক লেন কি বদলে ফেলছে এর আত্মপরিচয়?

বিয়ের প্রস্তাবে অসম্মতি, পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ তরুণী খুন

ই-সিগারেট বা ভ্যাপের ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে যুক্তরাজ্যের স্কুল শিশুরা

নিউজ ডেস্ক