যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদেরও দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে—এমন ঘোষণা দিয়েছেন হোম অফিসের আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী অ্যালেক্স নরিস। ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের পরিবারের ক্ষেত্রে ‘বৈধ থাকার অধিকার না থাকলে’ সবাইকে ফেরত পাঠানো হবে বলে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান উঠে এসেছে।
মন্ত্রী অ্যালেক্স নরিস জানিয়েছেন, আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়া পরিবারগুলোর অপসারণ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, যেসব পরিবারকে কর্মকর্তারা বৈধ শরণার্থী হিসেবে গণ্য করছেন না, তাদের ক্ষেত্রে সরকার “স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়াকেই অগ্রাধিকার” দিচ্ছে, তবে প্রয়োজন হলে জোরপূর্বক অপসারণও করা হবে। শিশুদের বিষয়েও এই নীতি একইভাবে প্রযোজ্য হবে বলেই তিনি নিশ্চিত করেছেন।
টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নরিসকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়—এটি কি যুক্তরাজ্যে জন্মানো শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে—তিনি স্পষ্টভাবেই বলেন, “হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত আইন অনুযায়ী সবাইকেই বিবেচনা করা হবে, এবং যাদের থাকার অধিকার নেই, তাদের অপসারণ করা হবে।” তার এই মন্তব্য যুক্তরাজ্যজন্ম শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
লেবার সরকারের দাবি, তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভিবাসন মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নরিস জানান, জুলাই ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০,০০০ অভিবাসীকে যুক্তরাজ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া জোরপূর্বক অপসারণের সংখ্যাও আগের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অপসারণের গতি বাড়াতে সরকার সম্প্রতি অক্সফোর্ডের কাছে একটি নতুন ইমিগ্রেশন রিমুভাল সেন্টার চালু করেছে। ক্যাম্পসফিল্ড হাউস নামে এই কেন্দ্রটি ১৬০টি নতুন বেড যোগ করেছে, যা দেশের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে মোট ধারণক্ষমতা ২,৪০০-তে উন্নীত করেছে। ভবিষ্যতে আরও ২৪০ বেড যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন এই কেন্দ্রে ছোট নৌকায় আগত অভিবাসী, বিদেশি অপরাধী এবং অবৈধভাবে কাজ করতে গিয়ে আটক হওয়া ব্যক্তিদের রাখা হবে।
সরকারের এই কঠোর নীতি মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, বিশেষ করে সেইসব বাবা-মায়েদের মধ্যে যারা বহু বছর ধরে যুক্তরাজ্যে সন্তান লালন-পালন করছেন এবং শিশুরা এই সমাজেই বড় হয়েছে। তবে সরকার বলছে, দেশের আইন অনুযায়ী যারা বৈধ না, তাদের অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সূত্রঃ এলবিসি
এম.কে

