যুক্তরাজ্যে ধনকুবেরদের সংখ্যা ১৯৯০ সালে ছিল মাত্র ১৫, আর ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৫-তে। এই সময়েই দেশটিতে সম্পদের বৈষম্য মারাত্মকভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইক্যুয়ালিটি ট্রাস্ট। সংস্থাটির এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ৫০ ধনী পরিবার দেশের ৫০ শতাংশ সাধারণ মানুষের সম্মিলিত সম্পদের চেয়েও বেশি ধনসম্পদ নিয়ন্ত্রণ করে।
ইক্যুয়ালিটি ট্রাস্টের সহ-নির্বাহী পরিচালক প্রিয়া সাহনি-নিকোলাস বলেন, “চরম ধনসম্পদ সমাজের জন্য এক ধরনের ‘ভ্যাম্পায়ারিক’ হুমকি। এই সম্পদের উৎস—সম্পত্তি, উত্তরাধিকার ও ফাইন্যান্স—বিপুল সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতির জন্য দায়ী।” তিনি দাবি করেন, ধনীরা একদিকে সমাজের সংকট থেকে মুনাফা করছে, অপরদিকে সেই সংকট আরও গভীরতর করছে।
সাম্প্রতিক রিপোর্টে আরও জানা যায়, ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ দুই ধনী ব্যক্তির সম্মিলিত সম্পদ ১৯৯০ সালের পুরো রিচ লিস্টের চেয়েও বেশি। বিশ্লেষকেরা এটিকে ‘অশ্লীল ধনসম্পদ বৃদ্ধি’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্যাট্রিয়টিক মিলিয়নেয়ার্স ইউকে-র সদস্য জুলিয়া ডেভিস বলেন, “ধনীদের অনেকেই কর ফাঁকি ও কর ব্যবস্থাপনার জটিল কৌশলের মাধ্যমে কম কর দেয়, অথচ সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বেশি হারেই কর দিয়ে থাকেন।” তিনি ধনীদের ‘চাকুরিদাতা’ না বলে ‘চাকুরি ধ্বংসকারী’ বলার পক্ষে মত দেন।
নিউ ইকনমিকস ফাউন্ডেশনের অর্থনীতিবিদ ফারনান্দা বলাতা বলেন, “এই অবস্থা দুর্ঘটনাবশত নয়। ধনীদের সঙ্গে ক্ষমতাবানদের সম্পর্ক এত গভীর হয়ে গেছে যে সেটা এখন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানেও প্রভাব ফেলছে।”
অর্থনীতিবিদ ড. বেঞ্জামিন টিপেট বলেন, “১৯৯০ সাল থেকে যদি ধনীদের ওপর ২% হারে সম্পদ কর আরোপ করা হতো, তাহলে আজকের দিনে প্রায় £৩২৫ বিলিয়ন জাতীয় তহবিল গড়ে তোলা যেত।”
বিশ্লেষকদের মতে, এখনই সময় ধনসম্পদের সীমা নির্ধারণ করা—যার ঊর্ধ্বে যাওয়া সমাজের জন্য ক্ষতিকর। এবং ধনীদের অস্তিত্বের এই একচেটিয়া গঠন ভাঙতে না পারলে, তা হবে গোটা জাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২০ মে ২০২৫