কোম্পানির নিবন্ধন সংখ্যা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখন বাই-টু-লেট কোম্পানির সংখ্যা ফাস্ট ফুড শপের চেয়ে চার গুণ বেশি।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, বাই-টু-লেট ব্যবসা এখন যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় একক ব্যবসার ধরণ হয়ে উঠেছে। এস্টেট এজেন্সি হ্যাম্পটনসের তথ্যানুযায়ী, কোম্পানিজ হাউসে নিবন্ধিত বাই-টু-লেট কোম্পানির সংখ্যা এখন যেকোনো অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় বেশি।
গত এক দশকে এই খাতে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষ করে ছোট আকারের বাড়িওয়ালারা, যারা আগে ব্যক্তিগত নামে বাড়িভাড়া দিতেন, তারা কর সুবিধা হারানোর কারণে কোম্পানি গঠন করে সম্পত্তি পরিচালনার দিকে ঝুঁকছেন।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বাই-টু-লেট কোম্পানির সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির শেষে মোট নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৪,০১,৭৪৪। যাতে দেখা যায় বিনিয়োগকারীরা কর হতে মওকুফ পাওয়ার জন্য তাদের সম্পত্তিগুলো ব্যক্তিগত মালিকানা থেকে কোম্পানির নামে স্থানান্তর করছেন।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৯২,৯৭৫। হ্যাম্পটনসের মতে, কর পরিবর্তন কার্যকর না হলে বেশিরভাগ বাই-টু-লেট সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানায় থেকেই যেত এবং বাড়িওয়ালারা বার্ষিক কর রিটার্নে এগুলো ঘোষণা করতেন।
এমনকি উচ্চতর বন্ধকী সুদের কারণে ছোট বাড়িওয়ালাদের অনেকে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে দিলেও, নতুন বাই-টু-লেট কোম্পানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভাড়াটিয়ারা দ্বিগুণ হারে বাড়তি ভাড়ার চাপে পড়েছেন, তথাপি কিছুটা স্বস্তি এসেছে। হ্যাম্পটনসের মতে, নতুন ভাড়ার গড় মাসিক হার ১% বৃদ্ধি পেয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে £১,৩৫৫ হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর ২০২০-এর পর থেকে সবচেয়ে কম বৃদ্ধির হার। রিনিওয়ালের ক্ষেত্রে, গড় ভাড়া ৫.৬% বৃদ্ধি পেয়ে মাসে £১,২৬২ হয়েছে।
লন্ডনে নতুনভাবে চুক্তিবদ্ধ ভাড়াগুলো ২.৮% কমেছে, যার ফলে স্থানান্তরের খরচ মে ২০২৩-এর স্তরে ফিরে এসেছে। বিশেষ করে লন্ডন শহরের আশেপাশে গত ১২ মাসে ভাড়া ৫.১% কমেছে, যা এখন ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ হারের তুলনায় ৯.৪% কম।
হ্যাম্পটনসের গবেষক আনিশা বেভারিজ বলেন, “নতুন বাড়িতে উঠতে যাওয়া ভাড়াটিয়ারা দেখতে পাচ্ছেন ভাড়ার বৃদ্ধির হার প্রায় থেমে গেছে। বিশেষ করে লন্ডনের বাসিন্দারা দেখছেন তাদের ভাড়া কমছে, যা মহামারির সময়ের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়।”
২০২৪ সালে ৬১,৫১৭টি নতুন লিমিটেড কোম্পানি গঠিত হয়েছে, যা ২০২৩ সালের আগের রেকর্ডের তুলনায় ২৩% বেশি।
বর্তমানে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে কোম্পানির মালিকানাধীন বাই-টু-লেট সম্পত্তির সংখ্যা ৬,৮০,০০০-এ পৌঁছেছে, এবং প্রতি বছর নতুন করে ৭০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ সম্পত্তি এই কাঠামোর আওতায় আসছে। তবে এর সবগুলো নতুন সম্পত্তি নয়—অনেক বাড়িওয়ালা তাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি কোম্পানির নামে স্থানান্তর করছেন।
তবে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা যায় এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা ধীর হতে পারে। কারণ স্ট্যাম্প ডিউটি সারচার্জ ৩% থেকে ৫% করা হয়েছে, এবং কম সুদের হার অনেক বিনিয়োগকারীকে তাদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত নামে রাখার জন্য উৎসাহিত করতে পারে।
তবুও, নতুন বাই-টু-লেট প্রপার্টির তিন-চতুর্থাংশই এখনো কোম্পানির নামে হচ্ছে বলে হ্যাম্পটনস জানিয়েছে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৮ মার্চ ২০২৫