ব্রিটেনের ভিসা নীতির কারণে নিজের স্ত্রী, সন্তান ও সৎপুত্র থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন লেইটন অ্যালেন নামের এক ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি অভিযোগ করেছেন, “শুধু শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ও প্রেমে পড়েছি বলেই শাস্তি পাচ্ছি।”
২০২২ সালে তানজানিয়ায় সফরের সময় সোফি নিয়েনজার সঙ্গে পরিচয় হয় অ্যালেনের। তাদের একটি সন্তান হয় এবং তারা যুক্তরাজ্যে একসঙ্গে বসবাসের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সরকার ভিসা আয়ের শর্ত পরিবর্তন করায় সেই পরিকল্পনা থমকে যায়।
আগে যেখানে বছরে £১৮,৬০০ আয় দেখিয়ে সঙ্গীর ভিসার আবেদন করা যেত, এখন সেই সীমা বেড়ে হয়েছে £২৯,০০০ বা £৮৮,৫০০ সঞ্চয়। পেট্রোল স্টেশনে কাজ করে অ্যালেনের আয় £২১,৬০০, যা নতুন সীমার অনেক নিচে।
বর্তমানে অ্যালেন যুক্তরাজ্যে, আর নিয়েনজা তানজানিয়ায় দুই বছরের শিশু মাইলস ও আগের সম্পর্ক থেকে হওয়া ১১ বছরের ছেলে অ্যালেক্সকে একাই লালন-পালন করছেন। মাইলস এখন বাবাকে চিনেও না, বলছেন অ্যালেন।
অ্যালেন বলেন, “আমার পরিবারকে একত্র করতে পারছি না শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সীমার কারণে। ধনীদের জন্য এই নিয়ম বাধা নয়, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের জন্য এটা অবিচার।”
Reunite Families UK নামের সংগঠন এই বিচ্ছিন্নতার বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। পার্লামেন্টে এক অনুষ্ঠানে তারা এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়—এই নীতি পরিবার বিচ্ছিন্ন করে, শিশুদের মানসিক ক্ষতি করে এবং বৈষম্যমূলক।
অ্যালেন বলেন, “তানজানিয়ায় গেলেও ছেলেটা আমাকে চিনে না। ওর কাছে আমি ‘ফোন বাবা’। আসল মানুষ না।”
তিনি তানজানিয়ায় যেতেও পারছেন না, কারণ সেখানকার আইন অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ‘ডিপেন্ডেন্ট’ হিসেবে বিবেচিত হন না।
অ্যালেন বলেন, “আমি প্রায় সব উপার্জন তানজানিয়ায় পাঠাই। অথচ যদি সোফি এখানে আসতে পারতো, সে কাজ করে নিজেও অবদান রাখতে পারতো। এখন আমরা দুই দেশেই কষ্ট করছি।”
হোম অফিস জানিয়েছে, মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির (MAC) প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। কমিটি বলেছে, এই নীতি মানবাধিকারের (ECHR ধারা ৮) সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
Reunite Families UK-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ক্যারোলাইন কুম্বস বলেন, “এই আয়ের শর্ত মূলত শ্রমজীবী ও সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাব ফেলে। নীতির ভারসাম্য ফেরাতে হবে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৬ জুন ২০২৫