20.3 C
London
July 6, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে স্টারমারের আইন ভেঙে টিকে আছে অবৈধ রাইডার চক্র, ধসে পড়ছে বৈধ আয়

যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে কাজ করা হাজার হাজার ডেলিভারি রাইডার অভিযোগ করছেন, অবৈধ অভিবাসীদের কারণে তাদের মজুরি অর্ধেকে নেমে গেছে। অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ বর্তমান উপার্জনে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়।

এক্সপ্রেস-এর এক তদন্তে দেখা গেছে, সরকারি অর্থে পরিচালিত হোটেলে বসবাসরত আশ্রয়প্রার্থীরা প্রকাশ্যে ফুড ডেলিভারির কাজ করছেন। হোম অফিসের নির্দেশনা সত্ত্বেও, JustEat ও Deliveroo-র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে অবৈধ রাইডারদের শনাক্ত করতে।

অভিযোগ উঠেছে, WhatsApp গ্রুপে রাইডার অ্যাকাউন্ট কেনাবেচা হচ্ছে। সেখানে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা চলছে। একজন লিখেছেন, “সবসময় একটা রাস্তা থাকবে।” আরেকজন ছোট নৌকায় আসা অভিবাসীদের ভিডিও শেয়ার করে বলেন, “নতুন রাইডাররা চলে আসছে।”

JustEat-এর ফেসিয়াল রিকগনিশন ব্যবস্থা সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায় এবং Deliveroo শুধু শিফটের শুরুতে ছবি চায় — এতে করে অন্য কেউ স্ক্যান করে সারাদিন কাজ করতে পারে।

৩৬ বছর বয়সী রাইডার এডওয়ার্ড বেটস বলেন, “প্রথম দুই সপ্তাহেই বুঝেছিলাম, অনেক অবৈধ কর্মী আছে এই খাতে। পাঁচ বছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।”

ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, “অবৈধ কর্মসংস্থান অবৈধ অভিবাসনের প্রধান উৎস। এটি পাচারকারীদের ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করছে।”

রিফর্ম ইউকে দলের এমপি লি অ্যান্ডারসন বলেন, “এই পরিস্থিতি লেবার সরকারের দুর্বলতার প্রতীক। যারা আইন মেনে চলে, তারা শাস্তি পাচ্ছে, আর অবৈধরা পুরস্কৃত হচ্ছে।”

ডেলিভারি চালক লুবোমির কোনাকচিস্কি জানান, একসময় একটি ডেলিভারিতে কমপক্ষে £৪.৫০ পাওয়া যেত, এখন সেটা £২.৬০-এ নেমে এসেছে। তার ভাষায়, “বর্তমান খরচে এই আয়ে টিকে থাকা অসম্ভব।”

তুরস্ক থেকে বৈধভাবে আসা রাইডার চেঙ্ক বলেন, “আমরা মজা করে বলি, অবৈধভাবে এলে জীবন ভালো হতো। এখন কর দিচ্ছি, বিল দিচ্ছি — অথচ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”

রাইডার মুহাম্মদ ইয়ান বাহ জানান, তিনি বহুবার অবৈধ রাইডারদের বিষয়ে হোম অফিস, পুলিশ ও JustEat-কে জানিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই তার অভিযোগ উপেক্ষিত হয়েছে।

একবার তিনি এক অবৈধ রাইডারের তথ্য হোম অফিস অফিসারদের জানান, তারা বলেন, “ক্রাইমস্টপারসে ফোন করুন,” কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।

হোম অফিস জানিয়েছে, তারা JustEat ও Deliveroo-র সঙ্গে বৈঠকে নিয়মিত ফেসিয়াল চেক চালুর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

সীমান্ত নিরাপত্তা মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল বলেন, “সরকার অবৈধ কর্মসংস্থানকে প্রশ্রয় দেবে না। এটি সৎ কর্মীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”

Deliveroo ও JustEat উভয়েই বলেছে, তারা তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছে এবং হোম অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

তবে রাইডারদের বক্তব্য স্পষ্ট — প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তবতার ফারাক অনেক, আর সেই ফারাকেই দিনে দিনে ভেঙে পড়ছে তাদের জীবিকা।

সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস

এম.কে
০৬ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

বন্ধ হয়ে গেছে বহু ব্রিটিশ রেস্তোরাঁ

দাস ব্যবসায় ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পৃক্ততা নিয়ে গবেষণায় চার্লসের সমর্থন

লন্ডনের সবচেয়ে ছোট্ট বাড়ির দাম মিলিয়ন ইউরো!