8.5 C
London
March 16, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যের এনফিল্ড কাউন্সিল ১০০টি পরিবারকে গৃহহীন করে রেখেছে

যুক্তরাজ্যের লেবার-নিয়ন্ত্রিত এনফিল্ড কাউন্সিল গত বছর ১০০টিরও বেশি পরিবারকে কোনো সহায়তা ছাড়াই গৃহহীন অবস্থায় ছেড়ে রেখেছে। তবে কাউন্সিল এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলে, এলাকার বাইরে পুনর্বাসনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাদের এই অবস্থা।

প্রায় ৮০% কাউন্সিলের ফ্রিডম অব ইনফরমেশন ডেটা দেখিয়েছে, ২০২৪ সালে ৬১৫টি পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের আইনি দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। কারণ তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের এলাকার বাইরে বসবাসের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।

লেবার-নিয়ন্ত্রিত এনফিল্ড কাউন্সিল এই সমস্যায় বেশি জর্জরিত বলে জানা যায়। যেখানে ১১৫টি ঘটনা ঘটেছে—যা পুরো ইংল্যান্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। এটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন এনফিল্ড কাউন্সিল লিভারপুল অঞ্চলে বাড়ি কিনে গৃহহীন পরিবারগুলোর পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা করছে।

তথ্যমতে জানা যায়, কাউন্সিলগুলোর কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে গৃহহীন ব্যক্তিদের সহায়তা এবং পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে। তবে যদি কোনো পরিবার “যৌক্তিক” পুনর্বাসন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তবে কাউন্সিল তাদের দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করতে পারে।

যুক্তরাজ্যের লন্ডন এবং অন্যান্য চাহিদাসম্পন্ন অঞ্চলে বাসস্থানের উচ্চমূল্যের কারণে বড় সংখ্যক গৃহহীন মানুষকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে লন্ডনের বিভিন্ন কাউন্সিল।

এনফিল্ড কাউন্সিল সম্প্রতি এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত হাউজিং অ্যাকশন সাউথওয়ার্ক এবং ল্যাম্বেথ (HASL)-এর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে এনফিল্ড কাউন্সিল গৃহহীনদের জন্য বেসরকারি ভাড়া দেওয়া বাড়ির ৯৪% প্রস্তাবই লন্ডনের বাইরে ছিল। যার মধ্যে ৫৯% ছিল উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডে। এর ফলে তিন-চতুর্থাংশ পুনর্বাসন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়, যা লন্ডনের যে কোনো কাউন্সিলের মধ্যে সর্বোচ্চ হার।

এনফিল্ডের আবাসন ও ইউনিয়ন কর্মী পল কার্শো বলেন, “এরা সবাই পরিবারসহ মানুষ—অনেকেই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে, অথচ কাউন্সিল তাদের সামাজিক সংযোগ ছিন্ন করে অপ্রাসঙ্গিক জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছে।”

এনফিল্ডের প্রাক্তন এক কাউন্সিলর চারিথ গুনাবর্ধনা, লেবার পার্টি থেকে গ্রিন পার্টিতে যোগ দিয়েছেন মূলত হাউজিং নীতির প্রতি অসন্তোষের কারণে বলে জানা যায়।

তিনি বলেন, “পরিবারে যখন শিশু থাকে, তখন এমন একটি জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া যেখানে তারা কাউকে চেনেন না। সেটা এক ধরনের সামাজিক বিচ্ছিন্নতা।”

গৃহহীন মানুষের অস্থায়ী আশ্রয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে এনফিল্ড কাউন্সিলের আর্থিক চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা কাউন্সিলের কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের এক কাউন্সিল সভায়, এনফিল্ডের হাউজিং ইমপ্রুভমেন্ট ডিরেক্টর ডুয়ানে ডায়ার বলেছিলেন, গৃহহীন পরিবারগুলোকে বিকল্প আবাসনের ক্ষেত্রে কম সুযোগ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করব। আমাদের দুর্বলতা হলো আমরা যথেষ্ট কঠোর ছিলাম না।”

এনফিল্ডের হাউজিং ইমপ্রুভমেন্ট ডিরেক্টরের সমালোচনা করে বেটার হোমস এনফিল্ড সংগঠনের ম্যাট বার্ন বলেন,
“যেসব মানুষ চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছে, তাদের প্রতি আরও কঠোর হওয়ার কথা ভেবে আমি হতবাক।”

এনফিল্ডের গৃহহীন সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে।এনফিল্ড কাউন্সিল যথেষ্ট পরিমাণ সামাজিক বাসস্থান নির্মাণ করেনি। মেরিডিয়ান ওয়াটার পুনর্বাসন প্রকল্পের প্রথম দুটি পর্যায়ে কোনো সামাজিক ভাড়ার বাড়ির পরিকল্পনা ছিল না। যদিও পরবর্তীতে কাউন্সিল জানিয়েছে, সামাজিক বাসস্থান এখন তাদের পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এনফিল্ড কাউন্সিলের এক মুখপাত্র বলেন:

“নাগরিকদের নিরাপদ, দীর্ঘমেয়াদি ও স্থিতিশীল আবাসন নিশ্চিত করতে, অন্যান্য লন্ডন কাউন্সিলের মতো আমরা কিছু সাশ্রয়ী মূল্যের এলাকায় বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছি।

আমরা এনফিল্ডের কাছাকাছি বাসস্থান খোঁজার চেষ্টা করছি। আমরা নতুন বাড়ি নির্মাণেও মনোযোগী। সরকারকে সাথে নিয়ে আমাদের আবাসন চাহিদা পূরণের জন্য আমরা কাজ চালিয়ে যাব।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৬ মার্চ ২০২৫

আরো পড়ুন

ব্রিটেনের রানির কোভিড পজিটিভ

অনলাইন ডেস্ক

হিথ্রো বিমানবন্দরে যাত্রীর স্যুটকেস হতে চারশো হাজার পাউন্ড উদ্ধার

রমজান সম্পর্কে শেখাতে স্কুলের শিশুদের খাওয়ালো সমারসেটের রেস্তোরাঁ