যুক্তরাজ্য সরকার দেশের জরুরি পরিষেবার ভয়েস ও ডেটা নেটওয়ার্কের জন্য প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে, যেখানে হ্যান্ডসেট সরবরাহের জন্য এই চুক্তির মূল্য সর্বোচ্চ ৯২৫ মিলিয়ন পাউন্ড (১.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত হতে পারে বলে তথ্যমতে জানা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রাথমিক বাজার সম্পৃক্ততার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে জরুরি পরিষেবা নেটওয়ার্ক (ESN) প্রকল্পের নতুন ধাপের কাজ শুরু করেছে। ১১ বিলিয়ন পাউন্ডের (১৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো যুক্তরাজ্যের পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার এবং কোস্টগার্ডের জন্য ভয়েস ও ডেটা নেটওয়ার্ক সরবরাহ করা। কিন্তু বছরের পর বছর বিলম্ব এবং বিলিয়ন পাউন্ড অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে এটি এখন পর্যন্ত সমস্যায় জর্জরিত।
একটি সরকারি ক্রয় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ESN-এর জন্য মোবাইল যোগাযোগ ডিভাইস সরবরাহে একটি কাঠামোগত চুক্তি তৈরি করতে চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জরুরি পরিষেবা মোবাইল যোগাযোগ কর্মসূচি (ESMCP)-এর মাধ্যমে তারা কয়েক বছর ধরে ডিভাইস বাজার মূল্যায়ন করছে এবং এখন সরবরাহকারীদের প্রাথমিক বাজার সম্পৃক্ততায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, সরবরাহকারীরা ছয়টি পর্যন্ত ব্যবহারকারী ডিভাইসের বিভাগ—যার মধ্যে রয়েছে মজবুত হ্যান্ডহেল্ড, মজবুত ডুয়াল-মোড হ্যান্ডসেট, অ-মজবুত মডেল, স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ হ্যান্ডহেল্ড, ফিচার ফোন এবং স্থির যানবাহন ডিভাইস—এর বিস্তারিত প্রযুক্তিগত ও সেবা প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা ও উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাবে।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সম্ভাব্য সরবরাহকারীরা ESMCP আয়োজিত ওয়েবিনারে অংশ নিতে পারবে। আনুষ্ঠানিক প্রতিযোগিতা নভেম্বর মাসে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে শুরু হওয়ার কথা।
ESN পুরনো কিন্তু নির্ভরযোগ্য এয়ারওয়েভ সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করবে, যা বর্তমানে যুক্তরাজ্যের পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস ব্যবহার করে। এয়ারওয়েভের ডেটা ব্যান্ডউইথ সীমিত হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালে নতুন এই প্রোগ্রাম চালু করে এবং ২০১৭ সালে এটি ব্যবহার শুরু করার পরিকল্পনা করেছিল। তবে প্রকল্পটি বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৯ সালের আগে চালু নাও হতে পারে।
প্রকল্পের ব্যয় প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ বিলিয়ন পাউন্ড থেকে বেড়ে বর্তমানে প্রায় ১১ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে।
প্রকল্পটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ ও আইনি জটিলতার মুখোমুখি হয়েছে বলে জানা যায়। ২০২২ সালে প্রতিযোগিতা ও বাজার কর্তৃপক্ষ (CMA) মোটোরোলা-এর উপর মূল্যসীমা আরোপের প্রস্তাব দেয়, কারণ কোম্পানিটি একসাথে এয়ারওয়েভ ও ESN-এর সরবরাহকারী ছিল। এই দ্বৈত ভূমিকা প্রকল্পের সময়মতো অগ্রগতিতে স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। CMA অনুমান করেছিল যে মোটোরোলা তাদের অবস্থানের কারণে অতিরিক্ত ১.৩ বিলিয়ন পাউন্ড (১.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) লাভ করেছে।
পরবর্তীতে মোটোরোলা ESN প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায় এবং এর স্থলাভিষিক্ত হয় আইবিএম। এয়ারওয়েভের মূল্যসীমা প্রত্যাহারের জন্য মোটোরোলার সর্বশেষ আপিলও খারিজ হয়েছে।
সূত্রঃ পাবলিক টেকনোলজি ডট নেট
এম.কে
২৯ জুলাই ২০২৫