অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই প্রকাশনী প্রগতি বইঘর ও বুকস অব বেঙ্গলের বিক্রি বন্ধের পর থেকে অনলাইনভিত্তিক বইয়ের দোকান রকমারি ডটকমেও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রকমারিতে জাফর ইকবালের প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে ‘নট অ্যাভেইলেবল’। বুধবার ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে দশটায় এমন চিত্র দেখা গিয়েছে।
তবে রকমারি কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কালেকশনে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই শেষ হয়ে যাওয়ায় ‘নট অ্যাভেইলেবল’ দেখাতে পারে। এদিকে, ব্যবহারকারীরা কোটা আন্দোলনকারীদের নিয়ে জাফর ইকবালের মন্তব্যের জেরে রকমারির এমন পদক্ষেপে সাধুবাদ জানিয়েছেন। রকমারিতে জাফর ইকবালের বই না পাওয়ার তথ্যটি ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল।
লেখক আমিনুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন, অধ্যাপক জাফর ইকবালের বই যে প্রকাশন বিক্রি করবে, সে প্রকাশনী থেকে আপনারা কেউ বই কিনবেন না। রকমারি যদি জাফর ইকবালের বই বিক্রি বন্ধ না করে, আপনারা রকমারিকেও বর্জন করুন। রকমারিকে ঘোষণা দিতে হবে- আজ থেকে তারা জাফর ইকবালের বই বিক্রি করা বন্ধ করবে।
এর আগে, প্রগতি বইঘর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই বিক্রি না করার ঘোষণা দেয়। একই ইস্যুতে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই বিক্রি না করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বই কেনার প্লাটফর্ম ‘বুকস অব বেঙ্গল’। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ৭৭ হাজার ফলোয়ার রয়েছে। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তার দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।
ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বুকস অব বেঙ্গল। পোস্টে বুকস অব বেঙ্গল জানায়, ‘অনেকের মতো আমরাও একটা সময় মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা পড়ে বড় হয়েছি। অনেকের মতো আমাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আগ্রহ তৈরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু আজ কোটা আন্দোলন নিয়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে উনি যে ধরনের বক্তব্য প্রদান করেছেন সেটা কোনোভাবেই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
তারা আরও লিখেন, ‘আমরা এ বক্তব্যের ধিক্কার জানাই। আমাদের প্রতিবাদ হিসাবে আজকের পর থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের কোনো বই বুকস অব বেঙ্গল বাংলাদেশ বিক্রি করবে না।’
রকমারির কর্মকর্তা ইসমাঈল হোসাইন জানান, কোটা আন্দোলনকারীদের নিয়ে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের মন্তব্যে কারণে তার ওয়েবসাইটে তার বই ‘নট অ্যাভেইলেবল’ দেখাচ্ছে কিনা সেটা তার জানা নেই।
এর আগে, কোটা আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি চিরকুটে জাফর ইকবাল বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয় আর কোনোদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই রাজাকার। মূলত, এই মন্তব্য ঘিরেই নেটিজেনদের মধ্যে সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
এম.কে
১৭ জুলাই ২০২৪