TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রেকর্ড পতনের পরও মাঝারি মেয়াদে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন বাড়ার আভাস

সরকারি উপদেষ্টা ও মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির (MAC) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ব্রায়ান বেল জানিয়েছেন, দশকের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যে নেট অভিবাসন আবারও বেড়ে প্রায় ৩ লাখে পৌঁছাতে পারে। বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীর সংখ্যা পুনরায় বাড়তে শুরু করলে মাঝারি মেয়াদে এই বৃদ্ধি ঘটবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের নেট অভিবাসন দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪ হাজারে। তবে বাজেট দায়িত্ব দপ্তর (OBR)-এর সাম্প্রতিক পূর্বাভাসের সঙ্গে একমত পোষণ করে ব্রায়ান বেল বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজস্ব পরিস্থিতি অনুযায়ী অভিবাসনের সংখ্যা আবার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ৩ লাখের কাছাকাছি পৌঁছানো একটি “যৌক্তিক পূর্বাভাস”।

কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি নির্বাচনী ইশতেহারে নেট অভিবাসন কমানোর অঙ্গীকার করেছে। সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে অভিবাসন ইস্যু যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে নেট অভিবাসন রেকর্ড ৯ লাখ ৪৪ হাজারে পৌঁছেছিল। কোভিড-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি সচল রাখতে বরিস জনসনের সরকার ব্যাপকভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগে উৎসাহ দেওয়ায় এই উল্লম্ফন ঘটে। তবে পরবর্তী সময়ে নীতিগত কড়াকড়ির কারণে সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (ONS)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে নেট অভিবাসন ৬৯ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে প্রায় ৯ লাখ মানুষ যুক্তরাজ্যে অভিবাসন করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ লাখের বেশি কম। একই সময়ে দেশটি ছেড়েছেন ৬ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ হাজার বেশি।

এদিকে মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারিবারিক ভিসায় সঙ্গী হিসেবে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীরা তাদের জীবনকালে অর্থনীতিতে মোট ৫.৬ বিলিয়ন পাউন্ডের নেট ব্যয় তৈরি করতে পারে। ২০২২–২৩ সালে এ ধরনের ভিসায় প্রায় ৫১ হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন, যাদের অর্ধেকের বেশি কর্মহীন ছিলেন। প্রতিজনের ক্ষেত্রে আজীবন গড়ে ১ লাখ ৯ হাজার পাউন্ড রাজস্ব ঘাটতির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বিদেশি গৃহকর্মী ভিসায় আসা ন্যানি, গৃহপরিচারিকা, চালক ও ব্যক্তিগত পরিচর্যাকারীদের শোষণের ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কমিটির মতে, এই রুটে শোষণ ও নির্যাতনের প্রকৃত পরিসংখ্যান অজানা হলেও এমন ঘটনা যে ঘটে, তা স্পষ্ট। বর্তমান কাঠামোতে শোষণকারী নিয়োগকর্তারা প্রায় নজরদারির বাইরে থেকে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

তবে একই সঙ্গে ইতিবাচক দিকও তুলে ধরা হয়েছে। কমিটির হিসাব অনুযায়ী, ২০২২–২৩ সালে আগত দক্ষ কর্মীরা তাদের জীবনকালে যুক্তরাজ্যের সরকারি কোষাগারে নেটভাবে প্রায় ৪৭ বিলিয়ন পাউন্ডের ইতিবাচক অবদান রাখবেন। এই হিসাবের মধ্যে অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদি জনসেবা ব্যবহারের ব্যয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি

“কৃতজ্ঞতার নামে চুপ করে থাকার দিন শেষ” — BBC সিদ্ধান্তের পর জবাব দিলেন নাদিয়া হুসেইন

এবারের লকডাউনে যেসব কারণ ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ, অন্যথায় জরিমানা