মার্গারেট ম্যাকালাম যিনি কয়েক দশক ধরে লন্ডনের একটি টিউব স্টেশনে যাচ্ছেন শুধুমাত্র তার মৃত স্বামীর কণ্ঠস্বর শোনার জন্য। ২০১২ সালে ক্রিসমাসের ঠিক আগে একদিন ডাঃ মার্গারেট ম্যাকালাম এমব্যাঙ্কমেন্ট টিউব স্টেশনের কাছে বসেছিলেন। হঠাৎই তিনি লক্ষ্য করেন, মেট্রো স্টেশনে আর শোনা যাচ্ছে না লরেন্সের কণ্ঠস্বরে ঘোষণা। আসলে মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের সতর্ক করতো লরেন্সের কণ্ঠস্বর। মার্গারেট কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন। তারা জানান, নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘোষণা হচ্ছে মেট্রো স্টেশনে। সেই ব্যবস্থায় লরেন্সের কণ্ঠস্বর আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। বিষণ্ণ জানান, কণ্ঠটি তার মৃত স্বামী অসওয়াল্ড লরেন্সের।
তার স্বামী ১৬ বছর আগে মারা গেছেন। স্বামীর কণ্ঠস্বর শুনবেন বলে তিনি রোজ এমব্যাঙ্কমেন্ট স্টেশনে এসে বসে থাকেন।
উল্লেখ যে, মার্গারেটের স্বামী একজন অভিনেতা ছিলেন, অসওয়াল্ড সত্তরের দশকে নর্দান লাইনের ঘোষকও ছিলেন। ২০০৭ সালে স্বামীর মৃত্যুর আগেও মার্গারেট প্রায়ই “মাইন্ড দ্য গ্যাপ” ঘোষণা শোনার জন্য টিউব স্টেশনে যেতেন। আজ অসওয়াল্ড নেই, কিন্তু তার কণ্ঠস্বর শুনে মনকে শান্ত রাখেন মার্গারেট। যখনই স্বামীর শূন্যতা তাকে ব্যথিত করতো তখনি তিনি ছুটে যেতেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে, সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতেন।
স্টেশনের স্টাফ সদস্যরা এই গল্প শোনার পরে মার্গারেটের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। পাশাপাশি ওই স্টেশনে লরেন্সের কণ্ঠস্বরে ঘোষণা পুনরায় চালু করা হয়। সেই সঙ্গে অসওয়াল্ড -এর ঘোষণার রেকর্ডের একটি কপি তার হাতে তুলে দেয়া হয়। সময়ের সাথে সাথে লন্ডনের অন্যান্য স্টেশনে ডিজিটাল সিস্টেম চালু হলেও এমব্যাঙ্কমেন্ট টিউব স্টেশনের নর্দার্ন লাইনে আজ শোনা যায় অসওয়াল্ড লরেন্স বলছেন -‘মাইন্ড দ্য গ্যাপ’।
এম.কে
১১ অক্টোবর ২০২৩