লন্ডনের হেইনল্টে সন্ত্রাসী হামলায় একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক নিহত ও কয়েক ব্যক্তি আহত হবার খবর পাওয়া গিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের বরাতে স্থানীয়রা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। একটি তলোয়ার নিয়ে মারাত্মক তাণ্ডব ভোরের শহরতলির শান্তিকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে বলে অনেকে জানান।
স্কুলে যাওয়ার পথে একটি ১৪ বছর বয়সী ছেলে মারা যায় এবং দু’জন পুলিশ অফিসার সহ আরও চারজন ভয়ঙ্কর আক্রমণে আহত হন। ছুরিকাঘাতে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে পরিলক্ষিত হয় প্রায় তিন ফুট দীর্ঘ অস্ত্র দিয়ে হলুদ হুড জাম্পারে আচ্ছাদিত শেতাঙ্গ ব্যক্তিটি বিভিন্ন লোকদের তাড়া করে চলেছে। সেই আক্রমণকারী ব্যক্তিকে অনুসরণ করে যাচ্ছে পুলিশ। অবশেষে একজন মহিলা পুলিশের সাহসিকতায় তাকে ঝাপটে ধরা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা জেমস ফার্নান্দো বলেন, “ আমি সেই ছোট ছেলেটির কথা মাথা হতে সরাতে পারছি না। আমি তার মুখটি কল্পনা করা বন্ধ করতে পারি না। কিভাবে এতো দ্রুত একজন শিশুর জীবন হারিয়ে গেলো। আমি আমার প্রাতঃরাশ খাচ্ছিলাম যখন দেখলাম আক্রমণকারী লোকটি ধুসর রংয়ের ট্রানজিট ভ্যান থেকে বেরিয়ে এলো।
সে পুলিশ এবং অ্যাম্বুলেন্সের ক্রুদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে চিৎকার করে, ‘তোমরা কি ঈশ্বরে বিশ্বাস কর?’ সে প্রায় সকলকেই আক্রমণ করতে চাচ্ছিল, কেউ ট্রিপল নাইনে কল করার ২২ মিনিট পরে আক্রমণকারী ব্যক্তিকে থামানো সম্ভব হয়।”
হত্যার সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ার পরে গত রাতে ৩৬ বছর বয়সী আক্রমণকারী ব্যক্তিটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাক্ষাৎকার পুলিশ সহকারী কমিশনার লুইসা রোল্ফ বলেন, “ আহত থাকায় আমরা তার সাক্ষাৎকার নিতে পারিনি। আমরা এখন পর্যন্ত আক্রমণের কোনো ক্লু খুঁজে পাইনি।”
মেট পুলিশের চিফ সাপোর্ট অফিসার স্টুয়ার্ট বেল বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি না এই তাণ্ডবটি সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত কোনো বিষয়। এই সকল ঘটনা সত্যই ভয়াবহ।
মর্মান্তিকভাবে নিহত স্কুলছাত্রের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে একজন প্রতিবেশী বলেন, “ ছেলেটি খুব ভাল ও শান্ত প্রকৃতির ছিল। সে সকলকে খুব শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে চলাফেরা করত। আমি তাকে প্রতিদিন সকালে স্কুলে যেতে দেখতাম। এটা আমার জন্য একটি ধাক্কা। ”
এই এলাকার সাংসদ ও ছায়া স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং বলেছেন, পুরো ঘটনাটি এলাকাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। আমি ভাবতে পারছি না মৃত শিশুটির পরিবার কিভাবে এই শোক কাটিয়ে উঠবে। আমার গভীর সমবেদনা তাদের পরিবারের জন্য।
ঋষি সুনাক এই ঘটনাটিকে “মর্মান্তিক” হিসাবে বর্ণনা করে বলেন, “আমাদের রাস্তায় এই ধরনের সহিংসতার কোনও স্থান নেই।” বাকিংহাম প্যালেস বলেছে: “হেইনল্টের ভয়াবহ দৃশ্যের পরে, রাজা এই ঘটনার বিশদ বিবরণ জানতে চেয়েছেন। যে শিশুটি মারা গিয়েছে এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সকলের জন্য রয়েছে রাজার সহমর্মিতা।”
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান খুনি রামপেজকে “ধ্বংসাত্মক” হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং ১৪ বছরের স্কুল বালকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়।
সূত্রঃ ডেইলি মিরর
এম.কে
০১ মে ২০২৪