2.2 C
London
November 21, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা

জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি দাখিল করেছেন ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্স’র ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন।

মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। গত শুক্রবার লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার বাদী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার সারাহ ফোরে ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ইতিহাসের এক পৈশাচিক নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাসে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ছাত্র আন্দোলনের সূচনা ঘটে, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে পরিচিতি লাভ করে।

শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার অযৌক্তিক হারে পুনর্বহাল এবং সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ পদ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। তাদের দাবি ছিল, এই কোটা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অযাচিত অগ্রাধিকার প্রদান করে, যা দেশের মেধাবী এবং যোগ্য প্রার্থীদের জন্য চাকরির পথরুদ্ধ করে দেয়। আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার, তবে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর মতো ঘটনার পর এটি দ্রুত বৃহত্তর আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। শিক্ষার্থীরা তখন কেবল কোটা সংস্কার নয়, বরং প্রশাসনিক দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হন।

এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার পর সরকার এর জবাব দেয় অমানবিক সহিংসতার মাধ্যমে উল্লেখ করে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করতে সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে। এই বাহিনী নির্বিচারে গুলি, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র যেমন বার্ডশট প্লেট এবং তাজা গুলি ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের উপর হামলা চালায়।

ইতিহাসের এই বর্বরতম নৃশংসতায় ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এই গুরুতর অপরাধের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে সক্ষম হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে উল্লেখ করে আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তাই পূর্ববর্তী সরকার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত, যা নিরপেক্ষ তদন্তের পথে বড় বাধা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার কারণে, নিরপেক্ষ বিচার বা বিচার ব্যবস্থার প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত প্রাপ্তিতে রাজনৈতিক স্বার্থ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, যা ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর জন্য প্রতারণামূলক হবে। অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনার কারণে স্থানীয় আদালতে ঘোষিত কোনো দণ্ড কার্যকর হওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতায় বাধ্য হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি দাখিল করা হয়েছে।

এম.কে
০৩ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

অবশেষে কার্ডে পেমেন্ট নেয়ার অনুমতি পাচ্ছে উবার

বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ

বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের’ সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করলেন রুশ রাষ্ট্রদূত