সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে আদালতে মামলা হয়েছে, যেটির বাদী একসময় যুবলীগের কর্মী ছিলেন বলে আলোচনায় এসেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হওয়ার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের একটি আদালতে এ মামলা করেন তিনি; যাতে আসামি করা হয়েছে ১৮৭ জনকে।
কফিল উদ্দিন গত সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে মামলার আবেদন করলে বিচারক তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা ডিবির সাবেক প্রধান হারুনুর রশিদ, পিবিআইর সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা ওবায়দুল হক, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ মহসিন, জাহিদুল কবীরসহ ২৬ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
এ মামলা করার পর কফিলের যুবলীগ কর্মীর পরিচয় সামনে এলে তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী দাবি করে বলছেন, অতীতে পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি যুবলীগের নেতার সাথে থেকে তাদের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সেসময় করা হয়েছে বলে দাবি।
কফিলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে কোতয়ালী থানায় তিনটি মামলা থাকার বিষয়টি এক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া কফিল যুবলীগের কর্মী ছিলেন বলে সংগঠনটির কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
অস্ত্র ও মাদকের তিন মামলার আসামি কফিল উদ্দিন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পেশায় থাই এলুমনিয়িামের দোকানের কর্মচারী এই ব্যক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় কোতয়ালী থানায় করা একটি মামলার আসামিও।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা করায় তাকে আসামি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ আন্দোলনে আমি নিজেই ভিক্টিম, কিন্তু আমাকে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করেছে।
”আমি কখনো যুবলীগ ছাত্রলীগ করিনি, আমাকে বিএনপির একটি গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এ কাজ করিয়েছে।”
কিন্তু তারা কারা জানতে চাইলে তিনি নাম জানাননি।
সাবেক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরীর অনুসারী কি না জানতে চাইলে কফিল উদ্দিন বলেন, “কারও সাথে ছবি তুললে তার অনুসারী হয় না। আমি আমার এক বন্ধুর ডাকে সেখানে গিয়েছিলাম, ছবি তুলেছি। একটা মিছিল করতে বাধ্য হয়েছি।সেটা আমার অপরাধ না।”
শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কফিল অভিযোগ করেন, গত ৪ অগাস্ট চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং গুলি করা হয়। এসময় আহত হন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি তার।
এম.কে
২১ নভেম্বর ২০২৪