14.8 C
London
October 17, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

শ্রেণিবদ্ধ তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সাবেক ট্রাম্প উপদেষ্টা জন বোল্টনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষা তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগ বৃহস্পতিবার মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের একটি গ্র্যান্ড জুরির কাছে অভিযোগপত্র উপস্থাপন করলে, জুরি মনে করে মামলাটি চালিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ৭৬ বছর বয়সী বোল্টন তার ব্যক্তিগত ইমেইল ও বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত শ্রেণিবদ্ধ তথ্য প্রেরণ ও সংরক্ষণ করেছেন। ২৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষা তথ্য (NDI) প্রেরণের আটটি ও অবৈধ সংরক্ষণের দশটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রেণিবদ্ধ তথ্যের অপব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। শুক্রবার বোল্টনের আত্মসমর্পণ করার কথা রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বোল্টন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও বৈদেশিক সম্পর্ক সংক্রান্ত সংবেদনশীল নথি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। এসব নথির মধ্যে কিছু “টপ সিক্রেট” শ্রেণির ছিল। তিনি এই তথ্য তার স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলেন বলে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে।

তদন্ত নথি অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ইরানের সঙ্গে যুক্ত একটি সাইবার গোষ্ঠী বোল্টনের ব্যক্তিগত ইমেইল হ্যাক করে ওই শ্রেণিবদ্ধ তথ্যের কিছু অংশে প্রবেশাধিকার পায়। বোল্টনের এক প্রতিনিধি এফবিআইকে হ্যাকিংয়ের বিষয়টি জানালেও সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্ক করা হয়নি।

বোল্টনের আইনজীবী অ্যাবি লোয়েল বলেছেন, অভিযোগগুলো তার ক্লায়েন্টের ব্যক্তিগত ডায়েরির এন্ট্রি থেকে উদ্ভূত, যা অপরাধ নয়। তিনি জানান, ডায়েরিগুলো শ্রেণিবদ্ধ ছিল না, কেবল পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এবং ২০২১ সালেই এফবিআই বিষয়টি জানত।

বোল্টন এক বিবৃতিতে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি আদালতে তার বৈধ আচরণ প্রমাণ করতে প্রস্তুত। তিনি অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছেন। “আমি এখন বিচার বিভাগের অস্ত্রায়নের সর্বশেষ লক্ষ্যবস্তু,” বলেন বোল্টন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি অভিযোগ সম্পর্কে জানেন না, তবে বোল্টনকে “খারাপ মানুষ” বলে মন্তব্য করেন।

বোল্টন ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বরখাস্ত হন। ২০২০ সালে প্রকাশিত তার বই The Room Where It Happened ট্রাম্পকে ভূরাজনৈতিক বিষয়ে অজ্ঞ হিসেবে উপস্থাপন করে। হোয়াইট হাউস বইটি প্রকাশ রোধে মামলা করলেও আদালত তা নাকচ করে দেয়, এবং বইটি প্রকাশিত হয়।

এই অভিযোগের মাধ্যমে বোল্টন হলেন গত দুই মাসে অভিযুক্ত হওয়া ট্রাম্পবিরোধী তৃতীয় রাজনীতিক। এর আগে নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে এবং সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি কংগ্রেসে মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত হন।

ট্রাম্প এর আগেই সামাজিক মাধ্যমে বিচার বিভাগকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “আমরা আর দেরি করতে পারি না — এটি আমাদের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করছে।”

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
১৭ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

জাপানে বিনামূল্যে ইন্টার্নশিপের সুযোগ, প্রতি কর্মদিবসে থাকছে ২৪০০ ইয়েন

নিউজ ডেস্ক

বিশ্ব ‘তৃতীয় পারমাণবিক যুগের’ দ্বারপ্রান্তে, হুঁশিয়ারি যুক্তরাজ্যের

চিকিৎসায় নোবেল পেলেন কাতালিন কারিকো ও ড্রু ওয়েজমান