নেদারল্যান্ডসের হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সালিশ আদালত (পার্মানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন-পিসিএ) সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতাদেশ তুলে নিতে ভারতকে নির্দেশ দিয়েছে। গত ৮ আগস্ট আদালত রায় দিয়ে জানায়, ১৯৬০ সালের মূল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে কোনো স্থাপনা— যেমন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাঁধ— সিন্ধু বা সংশ্লিষ্ট নদীগুলোতে নির্মাণ করা যাবে না।
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়। এতে পূর্বাঞ্চলের তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর পানি ব্যবহারের অনুমতি পায় ভারত এবং পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের অধিকাংশ পানি ব্যবহারের অধিকার পায় পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, কোনো পক্ষ একতরফাভাবে এটি স্থগিত বা বাতিল করতে পারে না এবং বিরোধ নিষ্পত্তির সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া এতে উল্লেখ আছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৫ জন ভারতীয় ও একজন নেপালি পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। এর ফলে পাকিস্তানের কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়ে, কারণ সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলামের পানি প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। পাকিস্তানের সেচ ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি এই নদীগুলোর নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল।
পাকিস্তান বিষয়টি আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে উত্থাপন করে। রায়ে আদালত ভারতকে চুক্তির শর্তে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানায় এবং জানায়, যদি ভারত সিন্ধু নদে বাঁধ নির্মাণ করে, তবে তা অবশ্যই চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। পাকিস্তান রায়কে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে জানায়, আদালতের এই নির্দেশ সিন্ধু নদ অববাহিকার পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখতে সহায়ক হবে। ভারত এখনো রায়ের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, আনাদোলু এজেন্সি
এম.কে
১২ আগস্ট ২০২৫