8.6 C
London
November 18, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

স্কুলে প্রতিভার আলো ছড়াচ্ছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশুরা

১৯৮৫ সালে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশিদের সম্পর্কে দুটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল – একটি একাডেমিক জার্নালে, অন্যটি একটি শিক্ষা প্রতিবেদনে। দুটিই বেশ হতাশাজনক ছিল। 

 

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সেখানকার বাংলাদেশি শিশুরা স্কুলে “গুরুতরভাবে খারাপ ফলাফল” করছে।  লন্ডনের শিল্পায়ন গেলে তা বাংলাদেশিদের জন্য আরও খারাপ হবে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এতে। রিপোর্টে দাবি করা হয়, বড় হস্তক্ষেও ব্যতীত এই বাংলাদেশিদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে উঠবে।

 

তবে আনন্দের বিষয় হচ্ছে, রিপোর্টে এমন একটি গ্রুপের কথা বলা হয়েছে, যা ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ। গত দুই দশকে ইংল্যান্ডের গিসিএসই পরীক্ষায় শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় বাংলাদেশিরা ভালো রেজাল্ট করছে। ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা এখন ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান এবং ভালো চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে। তাদের অগ্রগতি ব্রিটেনের সাফল্য সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয়ের ইঙ্গিত দেয়।

 

১৯৭০ সালের গোড়ার দিকে ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের অভিবাসন শুরু হয়। অনেক অভিবাসী লন্ডনের পূর্ব প্রান্তে বসতি স্থাপন করেন।

 

1970 এর দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশি অভিবাসন শুরু হয়। অনেক অভিবাসী লন্ডনের অভ্যন্তরীণ পূর্ব প্রান্তে বসতি স্থাপন করেছে, আর্থিক জেলার কাছাকাছি। তারা সেখানে বৈষম্যমূলক আবাসন নীতি পরিচালনাকারী স্থানীয় কাউন্সিলদের দ্বারা এবং বর্ণবাদীদের দ্বারা যারা পূর্ব প্রান্তে (এবং কখনও কখনও যারা তা করেনি) আক্রমণ করেছিল। তারা প্রায়ই র্যাগ ব্যবসা এবং রেস্টুরেন্টে যেতেন। স্থানীয় কাউন্সিলদের বৈষম্যমূলক আচরণ এবং বর্ণবাদীদের আক্রমণ তাদের আরও পূর্ব দিকে ঠেলে দেয়।

 

২০০৯-১০ সাল থেকে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ৫% থেকে ১৬% বেড়েছে, যেখানে শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের হার মাত্র ৮% থেকে ১০% বেড়েছে।

 

বাংলাদেশিদের এই সাফল্যের পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে নীতি নির্ধারণ এবং ধৈর্য। ১৯৯৭ সালে লেবার সরকার একটি এডুকেশন টাস্ক ফোর্স গঠন করে। তারই একজন সদস্য হেইডি মির্জা জানান, দরিদ্র ইনার-সিটি স্কুলগুলোর জন্য অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ এবং সঠিক তদারকির ফলাফল অবশেষে দেখা যাচ্ছে। তবে কনজার্ভেটিভ সরকারের আমলে এই মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়া হয়। ৫৫টি শিক্ষা বিনিয়োগ এলাকার কোনোটিই লন্ডনের মধ্যে নয়। এগুলো পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশিদের জন্য খারাপ সংবাদ হলেও এখনই এর প্রভাব পড়বে না।

 

লন্ডনে থাকার কারণও বাংলাদেশিদের এই সাফল্যের পেছনে একটি বড় কারণ। আশির দশকের মধ্যভাগ থেকেই বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি শিথিল করায় লন্ডনের অর্থনীতিতে পুনর্জাগরণ হয়। ব্রিটেনে থাকা  অন্য জাতি হিসাব করলে বাংলাদেশিরাই সবচেয়ে বেশি রাজধানীকেন্দ্রিক। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ৫৫ শতাংশ বাংলাদেশিই লন্ডনে থাকে, যা আর কোন জাতির মধ্যে দেখা যায় না। ফলে অর্থনৈতিক কেন্দ্রের আশেপাশে থাকায় বাংলাদেশিরা এর সুবিধা পেয়েছে। অভিবাসীদের এই সাফলের পেছনে মূলত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে থাকা অঞ্চলের একটি সংযোগ রয়েছে।

 

তবে সত্যিকারের সাফল্যের পথ আরও অনেক দীর্ঘ। ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রায় ২৪% বিভিন্ন বেনিফিট পান, জাতীয়ভাবে যার গড় ১৬%। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্সের অনুমান, মধ্যবিত্ত শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ পরিবারের তুলনায় বাংলাদেশি পরিবারের সম্পদ পাচ ভাগের একভাগ।

 

২৯ নভেম্বর ২০২২
সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্য নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনাকল্পনা

বিশ্ব সেরা স্থাপত্যের স্বীকৃতি পেল সাতক্ষীরার হাসপাতাল

যুক্তরাজ্যের ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে জালিয়াতির খবরে তোলপাড়