TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

স্টারমারের দ্বৈত অবস্থানঃ ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন, আবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির আহ্বান

লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ইসরায়েলের গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ বন্ধ করার অধিকার রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন। তার এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে ব্রিটেনের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তীব্র সমালোচনা করেছেন।

লেবার পার্টি কনফারেন্স চলাকালে এলবিসি’র নিক ফেরারিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টারমার বলেন, হামাসের কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে “সন্ত্রাসবাদ” এবং ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার পূর্ণ অধিকার আছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল তাদের জিম্মিদের ফেরাতে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এর দায়ভার সম্পূর্ণ হামাসের।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের কাছ থেকে পানি ও বিদ্যুৎ বন্ধ করারও অধিকার রয়েছে, যদিও সবকিছু আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে থেকেই করতে হবে। তার আহ্বান, সব দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হামাসের কর্মকাণ্ডকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে স্বীকৃতি দিক এবং স্পষ্ট নিন্দা জানাক।

স্টারমার আবারও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসেবে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, হামাসের কর্মকাণ্ড শান্তির পথকে ইচ্ছাকৃতভাবে আরও দূরে ঠেলে দিয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, তিনি একইসঙ্গে ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছেন।

ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো প্রসঙ্গেও তিনি মন্তব্য করেন। তার মতে, শান্তিপূর্ণভাবে ফিলিস্তিনের বিষয়ে আলোচনা বৈধ হলেও যদি পতাকা ওড়ানো উসকানি বা হামলার পক্ষে যায়, তবে সেটি অন্য প্রসঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি উত্তর লন্ডনে ইহুদি সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণেরও নিন্দা জানান।

স্টারমারের এই মন্তব্য আসে এমন সময়ে, যখন ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজায় ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই ২,১০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও বিস্তার লাভের ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েল খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ গাজায় প্রবেশ বন্ধ করেছে এবং সীমান্ত পয়েন্টগুলোতেও বিমান হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনারা ৩ লাখ ৬০ হাজার রিজার্ভ সৈন্য মোতায়েন করেছে। একইসঙ্গে লেবানন ও সিরিয়া সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হওয়ায় আঞ্চলিক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। গাজায় ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া অসংখ্য মানুষ উদ্ধারের জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় উদ্ধারকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কিয়ার স্টারমারের অবস্থান দ্বিমুখী। একদিকে তিনি ইসরায়েলের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানাচ্ছেন, অন্যদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির কথাও বলছেন। তাদের মতে, এটি এক ধরনের মুখোশধারী অবস্থান। তাছাড়া দেরিতে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কারণে এরই মধ্যে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তা আর পূরণ সম্ভব নয়।

সূত্রঃ এল বি সি

এম.কে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েও অপমানিত প্রধানমন্ত্রী

ব্রিটেনের নদীর মাছে কোকেন-কেটামিনের মতো মাদকের উপস্থিতি!

‘থ্রটলড’ আইফোন ব্যবহারকারীদের ৭৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ