উন্নত বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবায় প্রচলন হতে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে দেখা যায় স্তন ক্যান্সারের স্ক্রিনিংয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ। এতে রেডিওলজিস্টদের কাজের চাপকে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে, বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যান্সার সবচেয়ে প্রচলিত ক্যান্সার, প্রতি বছর ২.৩ মিলিয়নেরও বেশি মহিলা এই রোগে আক্রান্ত হয়।
প্রথামিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার চিহ্নিত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে মৃত্যুর হার হ্রাস করা সম্ভব। স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলের ভিত্তিতে জানা যায়, এআই স্ক্রিনিং দুইজন রেডিওলজিস্টের কাজের সমপরিমাণ যা কাজের চাপকে অর্ধেক করে তোলে।
ল্যানসেট অনকোলজি জার্নালে ৮০,০০০ এরও বেশি মহিলাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিশ্লেষণের ফলাফলগুলি প্রকাশিত হয়েছিল। যা থেকে ধারনা পাওয়া যায় এআই ম্যামোগ্রামগুলো সঠিকভাবে স্তন ক্যান্সার নির্ণয় করতে সক্ষম।
সুইডেনের গড় ৫৪ বছর বয়সের মহিলাদের স্তন ক্যান্সার নিয়ে গবেষণায় জানা যায় এআই-সমর্থিত স্ক্রিনিং, স্ট্যান্ডার্ড কেয়ারের সাথে তুলনীয়। উক্ত গবেষণায় স্ক্রিনিং স্ক্যানগুলির অর্ধেক রেডিওলজিস্ট দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়, বাকি অর্ধেক এআই-সমর্থিত স্ক্রিনিং দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়েছিল। যাতে দেখা যায় এআই-সমর্থিত স্ক্রিনিং এবং রেডিওলজিস্ট দ্বারা মূল্যায়িত স্ক্রিনিং কাছাকাছি মানের।
গবেষণায় ২৪৪ জন মহিলা এআই-সমর্থিত স্ক্রিনিং হতে ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয় এবং ২০৩ জন মহিলা মনুষ্য রেডিওলজিস্ট দ্বারা ক্যান্সার আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। যাতে দেখা যায় ৪১ জন বেশি ক্যান্সার রোগী এআই-সমর্থিত স্ক্রিনিং দ্বারা সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের অধ্যাপক স্টিফেন ডাফি গবেষণা নিয়ে মত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, স্তন ক্যান্সার সনাক্তকরণে এআই-চালিত পরীক্ষায় নিরীহ ক্ষতকেও ক্যান্সার ধারনা করে ফলাফল দিতে পারে। যাতে রোগীদের জন্য মনস্তাত্ত্বিক চাপের সৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ইংল্যান্ডের এনএইচএসের একজন মুখপাত্র গবেষণাটিকে অত্যন্ত উৎসাহজনক হিসাবে দাবি করেন। তিনি বলেন এআই স্ক্রিনিং মহিলাদের স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের গতি বাড়াবে যা আরো বেশি জীবন বাঁচাতে সহায়তা করতে সক্ষম হবে।
এম.কে
০২ জুলাই ২০২৩

