যুক্তরাজ্যে আসার আগেই স্ত্রীর মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও হাজার পাউন্ড ভিসা ফি ও স্বাস্থ্য চার্জ ফেরত না দেওয়ায় হোম অফিসের তীব্র সমালোচনা করেছেন এক শোকাহত স্বামী। সোমালি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মোহাম্মদ জামা জানান, তার স্ত্রী উবাহ আবদি মোহামেদের মৃত্যুর পরও হোম অফিস £৪,০০০-এর বেশি পাউন্ড ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
কেনিয়ার ২৫ বছর বয়সী উবাহ আবদি মোহামেদ যুক্তরাজ্যে স্বামীর সঙ্গে বসবাসের জন্য স্পাউস ভিসা পেয়েছিলেন। স্বামী জামা ভিসা আবেদন ফি হিসেবে £১,৯৩৮ এবং ইমিগ্রেশন হেলথ সারচার্জ (IHS) বাবদ £৩,১০৫ প্রদান করেন। IHS সাধারণত NHS সেবার জন্য নেওয়া হয়, যদি আবেদনকারী যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন।
২০২৪ সালের মার্চে উবাহের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর জামা তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। চিকিৎসার অগ্রগতি দেখে তারা খুশি হন এবং ৯ জুন হোম অফিস থেকে ভিসা অনুমোদনের খবর পান।
তবে ভিসা পাওয়ার মাত্র দুই দিন পর, ১১ জুন, উবাহ হঠাৎ মারা যান। জামা তার আইনজীবীর মাধ্যমে হোম অফিসে স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে IHS ফেরতের অনুরোধ করেন।
জবাবে হোম অফিস থেকে একটি প্রো ফর্মা চিঠি পাঠানো হয়, যা ভুলভাবে মৃত উবাহ আবদি মোহামেদের নামেই ঠিকানা করা ছিল। চিঠিতে বলা হয়, “আমরা আবেদনকারীর মৃত্যুর সংবাদে দুঃখিত”, তবে IHS ফেরতের কোনো নিয়ম নেই।
যেসব আবেদনকারী ভিসা প্রত্যাখ্যাত হন বা নিজেরাই আবেদন প্রত্যাহার করেন, তারা IHS ফেরত পান। কিন্তু মৃত্যুর ক্ষেত্রে এখনো কোনো রিফান্ড নীতি নেই।
জামা বলেন, “আমার স্ত্রী যুক্তরাজ্যে আসার আগেই মারা গেছেন। NHS-এর একটুকুও ব্যবহার করেননি। তাহলে কিভাবে এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে না? এটা অন্যায় ও নিষ্ঠুর।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই বিষয়ে মুখ খুলেছি যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন অবস্থায় পড়লে তার অন্তত ন্যায্য পাওনা ফিরে পায়।”
জামার আইনজীবী অ্যাডাম স্প্রে এই পরিস্থিতিকে “অমানবিক ও বিবেচনাহীন” বলছেন। তিনি বলেন, “এটা কল্পনাতীত যে শোকাহত একজন পিতা ও স্বামীকে এক পাউন্ডও ফেরত দেওয়া হয়নি। হোম অফিসের উচিত মানবিকতা দেখানো।”
দ্য গার্ডিয়ানের পক্ষ হতে হোম অফিসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে মতামত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
৩০ জুন ২০২৫