ব্রিটেনের নিউক্যাসলের ৪৩ বছর বয়সী তানিয়া লিডলকে দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত নারী দোকানচোর হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৪০০ বারেরও বেশি গ্রেপ্তার, ১৭২টি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেকর্ড এবং ৩৫০টিরও বেশি আলাদা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি দোকানে প্রবেশে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, আইন ও শাস্তির দুর্বলতার কারণে তিনি বারবার চুরির ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন।
তানিয়া লিডলকে নিয়ে দোকান মালিক ও কর্মীদের হতাশা চরমে পৌঁছেছে। বড়সড় কোট, উইগ আর সানগ্লাসে ছদ্মবেশ নিলেও তাকে সহজেই চিনে ফেলেন কর্মীরা। অভিযোগ রয়েছে, তিনি টিকটকে খোলাখুলি চুরির কৌশলও শিখিয়েছেন অনুসারীদের। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম সানডে টাইমস জানিয়েছে, তাকে দু’বার জেলে পাঠানো হলেও, উভয়বারই অর্ধেক সাজা ভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন। আর্থিক অক্ষমতার কারণে জরিমানাও এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। ভুক্তভোগী দোকান মালিকরা বলছেন, এভাবে আইনের ফাঁক গলেই তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন এবং “কখনোই সঠিকভাবে শাস্তি পাচ্ছেন না।”
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে দোকানচুরি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়। প্রথমবারের মতো অপরাধের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাসেক্সে চালু হচ্ছে “চিরাচরিত চোরদের জন্য প্রথম ইলেকট্রনিক ট্যাগিং স্কিম।”
একইসঙ্গে দোকান মালিকরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। ইয়োভিলের ব্যবসায়ী সামান্থা বেকার বলেন, “চোরদের আমরা সিসিটিভিতে শনাক্ত করি, নাম-পরিচয়সহ সব তথ্য দিই। তবুও পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। কখনো আবার সরাসরি চুরি ধরেও পুলিশ আসতে অস্বীকার করেছে।”
অন্যদিকে পুলিশ বলছে, দারিদ্র্য, আসক্তি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মতো বৃহত্তর সামাজিক সমস্যাই দোকানচুরি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অ্যাভন অ্যান্ড সমারসেট পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ কনস্টেবল জন কামিন্স বলেন, “কেউ দোকানচুরি করতে দেখলে পুলিশকে কল দেওয়া উচিত, নিজে হস্তক্ষেপ নয়। আমরা এসব রিপোর্টে সাড়া দেব।”
দোকানচুরির এ প্রবণতা ব্রিটেনের হাই স্ট্রিট ও সিটি সেন্টারকে অস্থির করে তুলেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, আইন কঠোর না হলে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চুরি চালিয়ে যাবে। আর তানিয়া লিডলের মতো কুখ্যাত চোরেরা থেকে যাবে “এক নারী অপরাধ ঢেউ” হয়ে।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
১৭ আগস্ট ২০২৫