17.2 C
London
August 7, 2025
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

৫ মাসে গাজা দখল করতে চান নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রত্যক্ষ অনুমোদন পাওয়া এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য গাজাকে ‘হামাসমুক্ত’ করা। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।

পাঁচ মাসব্যাপী এই অভিযানের জন্য মাঠে নামানো হবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর পাঁচটি ডিভিশন। সম্প্রসারিত এ সামরিক অভিযানে গাজার পুরো ভূখণ্ড দখল করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, গাজা দখলের মাধ্যমে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গাজার প্রায় ১০ লাখ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। এমন বড় পরিসরের অপারেশনের ফলে আরও ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন অনেকে।

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জেরুজালেম পোস্টকে জানান, পরিকল্পনা অনুমোদনের বিষয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বরং প্রশ্ন হলো—প্রস্তাবিত বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে কোনটি অনুমোদিত হবে।

তবে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন আইডিএফের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। মঙ্গলবার এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘এই অভিযান একটি বড় ধরনের ভুল। এর ফলে গাজায় জিম্মি থাকা মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।’ যদিও তিনি পদত্যাগের মতো কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছেন না।

এদিকে, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেরুজালেমের দুটি সূত্র জানায়, হোয়াইট হাউস থেকে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট পরামর্শ এলে তার ভিত্তিতে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হতে পারে এবং সেটি আজকের বৈঠকেই আলোচিত হবে।

অন্যদিকে নেতানিয়াহু প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাজার মানবিক সহায়তা বিতরণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জেরুজালেম পোস্টকে জানায়, ‘মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে চায় সরকার।

এ বিষয়ে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি, ইসরায়েল আমাদের এই সহায়তা বিতরণে সাহায্য করবে। আরব দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারাও অর্থসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে।’

গাজা দখল পরিকল্পনা নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার দৃষ্টি এখন গাজার ক্ষুধার্ত মানুষদের খাওয়ানোর দিকে। বাকি বিষয়গুলো ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত।’

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার সন্ধ্যায় ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হামাস। তারা গাজার শাসক হিসেবে কিংবা অন্য যেকোনো ভূমিকাতেই থাকতে পারবে না।’

গাজার পরিস্থিতি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়লেও নেতানিয়াহুর প্রশাসন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ—যুদ্ধ ও দখল দুই পথেই তারা হামাস নির্মূলের পরিকল্পনায় এগিয়ে যাবে।

সূত্রঃ জেরুজালেম পোস্ট

এম.কে
০৭ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

মালদ্বীপ থেকে সৈন্য সরাবে না ভারত!

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে জোট বাঁধছে স্পেন ও আয়ারল্যান্ড, প্রস্তুত নরওয়েও

যুক্তরাষ্ট্রে শিখ নেতাকে হত্যার প্রচেষ্টা, দিল্লিকে সতর্ক করল ওয়াশিংটন