21.4 C
London
June 27, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

অভিবাসীদের আশ্রয় ব্যয় নিয়ে রিভসের কড়া পরিকল্পনা, সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা

চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভসের আশ্রয় খাতে ১ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা গভীর সংশয়ে রয়েছেন। বুধবার সংসদে ঘোষিত বাজেট বক্তব্যে রিভস জানান, সরকার হোটেলে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা বন্ধ করে এবং আশ্রয় মামলার জট কাটিয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যয় সাশ্রয় করতে চায়, যা ব্যবহৃত হবে সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্পে।

এই পরিকল্পনার পেছনে রাজনৈতিক কৌশল স্পষ্ট—রিফর্ম পার্টির ভোটারদের মন জয় এবং সীমিত অর্থায়নের মধ্য থেকে বিকল্প খাতে অর্থ বরাদ্দ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন নীতি ঘোষণার তুলনায় অনেক বেশি কঠিন।

সোশ্যাল মার্কেট ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ ফেলো জনাথন থমাস বলেন, “এই পরিকল্পনা ‘রাজনৈতিক অগ্রাধিকার’ হলেও বাস্তবে এটি প্রয়োগ করা অত্যন্ত কঠিন। মামলার জট কমানো, আপিল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অননুমোদিত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো—সবই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।”

এদিকে বন্ড-এর নীতিনির্ধারণ ও প্রচার পরিচালক গিডিয়ন রাবিনোভিত্জ অভিযোগ করেছেন, সরকারের মধ্যে “প্রয়োজনীয় তৎপরতার অভাব” রয়েছে, যা ব্যয় হ্রাসে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বাজেটে এই আশ্রয় খাতে সাশ্রয়কে নিশ্চিত ধরে নিয়ে £৪ বিলিয়ন সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে হোম অফিস এখনো হোটেল খরচ কমাতে বাস্তব অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। বরং প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরও £২.২ বিলিয়ন আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যয়ে ব্যয় করা হবে, যা গত বছরের তুলনায় খুব কম নয়।

সরকার বিকল্প হিসেবে ‘মাঝারি আকারের’ পরিত্যক্ত ভবন যেমন পুরনো টাওয়ার ব্লক, ছাত্রাবাস ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ পুনঃব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছে। হোম অফিস জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই ১৯৮টি প্রস্তাব পেয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ থেকে, যারা এসব পরিত্যক্ত স্থাপনাকে আশ্রয় কেন্দ্রে রূপান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে।

ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ইগল সংসদীয় কমিটির সামনে বলেন, “আমরা হোটেল থেকে সরে এসে পুরনো ছাত্রাবাস বা কলেজের মতো ভবন ব্যবহার করতে চাই। এই মডেল সামরিক ঘাঁটির বিকল্প হিসেবে স্থানীয় ও কার্যকর সমাধান হতে পারে।”

তবে হাউস অফ কমন্সের হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ার ও কনজারভেটিভ এমপি ক্যারেন ব্র্যাডলি সতর্ক করে বলেন, “শুধু লক্ষ্য নির্ধারণ যথেষ্ট নয়, এর জন্য বাস্তবভিত্তিক সমাধান ও প্রস্তুতি দরকার। না হলে পুলিশের কার্যক্রম, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাস দমন ব্যবস্থাও ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

বিশ্লেষকদের মতে, রিভসের এই বাজি সফল হলে তা সরকারকে রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে বড় অর্জন এনে দিতে পারে। কিন্তু তা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে হোম অফিসের সামগ্রিক কর্মদক্ষতা ও সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১২ জুন ২০২৫

আরো পড়ুন

ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যঃপ্রতিবেদন

ইউরোপ একটি বিপজ্জনক মুহূর্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে: বরিস জনসন

এবার এমপি পদ থেকেও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি, পিটিশন দাখিল