TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিকশীর্ষ খবর

অ-ইউরোপীয় অভিবাসীদের ‘সুযোগ-সুবিধা’ সীমিত করতে চায় সুইডেন

ইউরোপের বাইরে থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা সীমিত করতে চায় সুইডেন৷ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও অকপটে জানিয়ে দিয়েছে এই নর্ডিক দেশটি৷

বছর খানেক আগে দেশটি শাসনের ক্ষমতায় পায় প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিসটারসনের নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকার৷ এর পর থেকেই অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের দিকেই হাঁটছে দেশটি৷

তবে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ইতিহাস রয়েছে সুইডেনের৷ ৯০-এর দশকে সংঘাতপূর্ণ দেশ তৎকালীন যুগোস্লাভিয়া, সিরিয়া, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, ইরাক এবং ইরানের বিপুল সংখ্যক নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছিল এই নর্ডিক দেশটি৷ তবে আশ্রয় দেয়ার পর এসব অভিবাসীদেরকে সুইডিশ সমাজে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বেগ পেতে হয়েছে সরকারকে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় ইকোনোকিম জোনের বাইরের দেশগুলো থেকে ২০১২ সালের পর সাত লাখ ৭০ হাজার অভিবাসী সুইডেনে এসেছেন৷ ক্ষমতাসীন তিন দলীয় জোট এবং তাদের সহযোগী কট্টর ডানপন্থি সুইডেন ডেমোক্র্যাটস (এসডি) নেতাদের কয়েকজন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক মতামতে এ তথ্য জানিয়েছেন৷

তাদের অভিযোগ, এই অভিবাসনের কারণে তাদের দেশে বিভক্তির জন্ম দিয়েছে৷

মতামতে তারা আরো উল্লেখ করেন, অভিবাসীদের অনেকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন ও বেকার, তাদের শিক্ষার ফলও খুব ভালো মানের নয় এবং তাদের মধ্যে সুইডিশ মুল্যবোধ আয়ত্ত্বেও ঘাটতি রয়েছে৷

তারা জানান, স্ক্যান্ডেনেভিয়ার এই দেশগুলো কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত৷ তবে বিদেশি বংশোদ্ভুতদের মধ্যে যারা বেকার এবং রাষ্ট্রীয় ভাতায় জীবিকা নির্বাহ করছেন, তারা আসলে দেশটির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন৷

তবে, নিজেদের পর্যালোচনায় এমন দাবির পক্ষে কোনো পরিসংখ্যান তুলে ধরেননি এই নেতারা৷

এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার অভিবাসন বিষয়ে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে৷ এই পরিবর্তনে অভিবাসীদের সুইডিশ ভাষা শেখার বাধ্যবাধকতা এবং দেশটির উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন চাকরি পাওয়ার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে৷ এ বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে সরকার৷

তাছাড়া, অভিবাসীরা সরকারের সুযোগ-সুবিধা কতটা পেতে পারেন, তা নির্ধারণ করে দিতে চায় সরকার৷ সরকার বলছে, এর ফলে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা একইসঙ্গে একাধিক সুবিধা যেমন, শিশু ভাতা, বাসা ভাড়া, বেকার ভাতা, অসুস্থতা ভাতা এবং মাতৃত্বকালিন/পিতৃত্বকালিন ছুটি পাবেন না৷

সরকারের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আগে তারা এগুলো পাওয়ার যোগ্য কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ তবে সেই নির্দিষ্ট সময়ের মেয়াদের বিষয়টি এখনও নির্ধারণ করেনি সুইডিশ সরকার৷

দেশটির পরররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্ড্রেস ইগেমেন বলেন, বিস্তারিত না জেনে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা কঠিন৷ তিনি জানান, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আগে অভিবাসীদের যোগ্যতার বিষয়টি এরইমধ্যে আইনে যুক্ত করা আছে৷

এম.কে
২৪ অক্টোবর ২০২৩

আরো পড়ুন

সরকার পরিবর্তনের জন্য এটি একটি সুযোগঃ ইরানের সাবেক যুবরাজ রেজা পাহলভি

‘প্রাকৃতিক চিকিৎসার’ মায়াজালে বিপদে ক্যান্সার রোগীরাঃ অনলাইনের ভুল তথ্য ডেকে আনছে মৃত্যু

বড়দিনের ছুটিতে ইতালিতে কড়া লকডাউন