11.3 C
London
November 25, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশশীর্ষ খবর

আদানিকে কী সুবিধা দিয়েছিলেন হাসিনা? ভারতীয় সাংবাদিকের বিশ্লেষণে তোলপাড়

ভারতের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি আদানি গ্রুপের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আর সমালোচনা চলে আসছে টানা কয়েক বছর ধরেই। গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরশাসক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই গণমাধ্যমে হাসিনার একের পর এক কেলেঙ্কারী ও অপকর্মের ঘটনা প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে।

এরইমধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎবিষয়ক চুক্তি নিয়ে ভারতীয় এক বিশিষ্ট সাংবাদিকের তথ্যবহুল বিশ্লেষণে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প আসলে কার স্বার্থে করা হয়েছে? কি রহস্য এর নেপথ্যে?- এমন অনেক গুরুতর বিষয় উঠে এসেছে এই বিশ্লেষণে। এটি ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে।

ব্যাপক বিতর্ক-সমালোচনা আর প্রতিবাদের মুখেই গেল বছর পরীক্ষামূলকভাব বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়। বিশ্বের অনেক মিডিয়াতে এই চুক্তির নেপথ্যে রহস্য ফাঁস করা হয়। কোলকাতায় এই প্রথম এ নিয়ে বিস্তারিত জানালেন বিশিষ্ট সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা।

সুব্রত বসুর সাথে এক টকশোতে সাংবাদিক পরাঞ্জয় গুহঠাকুরতা হাসিনা দেশের ন্যূনতম স্বার্থ উপেক্ষা করে একতরফাভাবে আদানিদের কি সুবিধা দিয়েছিলেন তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। তার তথ্যে উঠে আসে, মোদিকে মূলত খুশি করতেই হাসিনা আদানির সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি করেন। বিতর্কিত এই প্রকল্পের বাংলাদেশে না আছে কোনো প্রয়োজন, দেশের জন্য এতে না আছে কোনো স্বার্থ।

এটিকে অসম চুক্তি উল্লেখ করে গুহঠাকুরতা বলেন, এটা এমন একটা চুক্তি যেখানে বাংলাদেশ বা ভারতের কোন দেশেরই লাভ নাই। এই চুক্তিতে কেবলই লাভবান হবে আদানি। বিশ্বে এই ধরনের চুক্তি এটিই প্রথম। বাংলাদেশেও এর কোনো প্রয়োজন নেই। সবাই এর বিরোধিতা করেছে।

আদানির সাথে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিকে অদ্ভুত উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা খনন করা হবে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখান থেকে আমদানি করে আনা হবে ঝাড়খণ্ডে। সেখান থেকে বিদ্যুৎ যাবে বাংলাদেশে। এটা অদ্ভুত একটা বিষয়। তিনি বলেন, সবাই জানেন যে, এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও বাংলাদেশকে এক তৃতীয়াংশ খরচ আদানিকে দিতেই হবে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশকে তুলনামূলক সর্বোচ্চ ব্যয় করতে হবে এবং দেশটির এর কোনো প্রয়োজনও নেই।

এদিকে, আদানিকে দেখা হয় মোদির অর্থদাতা হিসেবে। তাই হাসিনা আদানিকে এভাবে একতরফা সুবিধা দিয়ে মূলত মোদিকেই খুশি করেছেন বলে মন্তব্য নেটিজেনদের। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ভারতের সহযোগিতায় হাসিনা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ।

ন্যূনতম দেশপ্রেম থাকলে কেউ এমন চুক্তি করতে পারে কিনা এমন প্রশ্ন তুলে সামাজিক মাধ্যমে একজন লিখেছেন, এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও বাংলাদেশকে এক তৃতীয়াংশ খরচ আদানিকে দিতেই হবে।বিনিময়ে অবশ্যই ভারতীয় সহযোগিতায় হাসিনা তার ক্ষমতা বজায় রাখতে পারবে। রাখে আল্লাহ মারে কে। দেশ থেকে পলাতক হয়ে সেই ভারতেই অবশেষে হাসিনা। বিএনপি জামাতকে হাসিনা বলে পেয়ারে পাকিস্তান যদিও তেমন কোনো প্রমাণ তার কাছে নাই। আর সে যে পেয়ারে ভারতকে কত কিছু দিয়েছে যেটা ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। এটা আমার ভাষ্য না। হাসিনার নিজের ভাষায় বলা।

শুভাগত চট্টপাধ্যয় লিখেছেন, খুব ভাল লেগেছে এই ভিডিও। এখন বোঝা গেল কেন রাহুল গান্ধী আদানী নিয়ে প্রশ্ন করলে মোদী জবাব দিতে পারেন না। আমি একটা প্রশ্ন রাখছি। ঝাড়খণ্ডের যে জায়গাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে সেখানেই তো কয়লা পাওয়া যায়। তাহলে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানির কি দরকার?

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎবিষয়ক ১৬৩ পৃষ্ঠার চুক্তি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নানা আলোচনা পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই চুক্তিটি বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্য প্রথমে লাভজনক বলে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা বাংলাদেশের জন্য ‘খুবই কম লাভজনক’। তারা আরও জানিয়েছে যে, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার পর কোনো বিদ্যুৎ ক্রয় করা না হলেও আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে বছরে প্রায় সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে বাংলাদেশকে।

আদানি চুক্তি বিরোধিতাকারীরা বলছেন, ২৫ বছর মেয়াদী এ চুক্তির মাধ্যমে মুনাফা বৃদ্ধির বিশেষ সুযোগ নিয়েছে ভারতীয় কোম্পানিটি। এই বিদ্যুৎ চুক্তিকে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ হিসেবে উল্লেখ করে এটি সংশোধন, এমনকি বাতিলেরও দাবি তোলা হয় বিভিন্ন মহল থেকে।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া / দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

এম.কে
১৬ আগস্ট ২০২৪

আরো পড়ুন

Hard to mortgage properties! 🏠

বাংলাদেশের হজ ও ওমরাহ যাত্রীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়

“নো-শো এমপি”কে জাপান পার্লামেন্ট হতে বহিষ্কার

নিউজ ডেস্ক