16.4 C
London
September 19, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ইংল্যান্ডে মাঝপথে নার্সিং কোর্স ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে শিক্ষার্থীরা

ইংল্যান্ডের অর্ধেকের বেশি নার্সিং শিক্ষার্থী নার্সিং কোর্স ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা যায়। পড়ালেখা ছাড়ার বিষয়ে তারা ব্যয় সংকুলান ও আর্থিক সংকটকে প্রধান কারণ হিসাবে বিবেচনা করেছে বলে প্রতিবেদনের তথ্যে জানা যায়।

প্রতিবেদনের সমীক্ষায় জানা যায়, ইংল্যান্ডের প্রায় অর্ধেক নার্সিং শিক্ষার্থী ইতিহাসে এই প্রথমবার স্নাতক হওয়ার আগেই পড়া ছাড়ার কথা বিবেচনা করছে।

২০১৭ সালে নার্সিং শিক্ষার্থীদের সরকার কর্তৃক সহায়তা বা অনুদান দেওয়া বন্ধ করার পর থেকে নার্সিং অধ্যায়নে আবেদনকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, রয়্যাল কলেজ অফ নার্সিং (আরসিএন)-এর তালিকাভুক্ত প্রায় ৪৬% অর্থাৎ প্রায় ৩২,০০০ শিক্ষার্থী কোর্স সম্পন্ন করার আগেই মাঝপথে পড়া বন্ধ করে দিতে পারে, যা অতিমাত্রায় আশঙ্কাজনক।

তথ্যমতে আরো জানা যায়, জীবনযাত্রার ব্যয়কে প্রাথমিকভাবে কোর্স ত্যাগ করার মূল কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে নার্সিং কোর্সের জন্য বছরে প্রায় নয় হাজার পাউন্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ফি’স প্রদান করতে হয়।

ল্যাঙ্কাশায়ারে নার্সিংয়ে তৃতীয় বর্ষের স্নাতক শিক্ষার্থী বলেন, আমার উপলব্ধি যে আমি জীবনে বড় ভুল করেছি নার্সিং পেশাকে গ্রহণ করে। আমি হিসাব করে দেখেছি যখন নার্সিং কোর্স সম্পন্ন করে চাকুরীতে প্রবেশ করবো তখন স্টুডেন্ট লোন পরিশোধ করার পর বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট অর্থ আয় করতে পারবো না। আমি ১৮ বছর বয়সে যখন পার্টটাইমার হিসাবে ম্যাকডোনাল্ডে চাকুরী করতাম সেই সময়ের কাছাকাছি বেতন আমার হাতে অবশিষ্ট থাকবে স্টুডেন্ট লোন দেয়ার পর।

আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় আমি দিচ্ছি নার্সিং ডিগ্রি সম্পন্ন করতে বিনিময়ে যে বেতন পাবো তা যৎসামান্য। এই ডিগ্রি নিতে গিয়ে আমার ঘাম,রক্ত, অশ্রু সব এক হয়ে গিয়েছে। এখন তাই মনে হচ্ছে নার্সিংয়ে পড়ালেখা করা ছিল জীবনের সবচেয়ে খারাপ সিদ্ধান্ত।

আরসিএন -এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক নিকোলা রেঞ্জার বলেন:, ” নার্সিং একটি অত্যন্ত ভালো পেশা যাতে নিজেকে মানবিক কাজে নিয়োজিত রাখা যায়। তবে পরবর্তী প্রজন্মের নবীন শিক্ষার্থীরা নার্সিং পেশা হতে নিজেদের সরিয়ে নেয়ার কথা বিবেচনা করছেন।”

তিনি বলেন, নার্সিং শিক্ষার্থীদের এই পথ বন্ধ করতে পরবর্তী সরকারকে দ্রুত ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের পেছনে প্রয়োজনে ভর্তূকি প্রদান করতে হবে এবং বেতন স্কেল নিয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, এক বছর আগে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এনএইচএস দীর্ঘমেয়াদী কর্মশক্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। ইংল্যান্ড সেই পরিকল্পনার অধীনে নার্সিং ওয়ার্কফোর্স প্রায় সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৫ লাখ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। যেখানে সময়কাল হিসাবে ২০৩৬-৩৭ সালের ভিতরে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে নার্সিং কোর্স শুরু করা লোকের সংখ্যা হঠাৎ করে মাঝপথে হ্রাস পাওয়া শুরু হওয়ায় এখনই এনএইচএসে কয়েক হাজার নার্স ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৩ জুলাই ২০২৪

আরো পড়ুন

বিমানবন্দরে প্রবাসী কর্মীদের করোনা টেস্টে ফি লাগবে না

গ্লাসগো পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

সুনাক প্রশাসনে ফের অঘটন, আরও দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ