TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলগামী অস্ত্র আটকাল স্পেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন উত্তেজনা

ইসরায়েলে অস্ত্র পরিবহন ইস্যুতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুদ্ধবিমান ও অস্ত্রবাহী জাহাজকে স্পেনের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মাদ্রিদ। তাদের সাফ কথা—স্পেনের ভূমি কোনোভাবেই ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানোর “পিছনের দরজা” হতে পারে না।

স্পেনের প্রভাবশালী দৈনিক এল পাইস জানিয়েছে, রোটা (কাদিস) ও মোরোন দে লা ফ্রোন্তেরা (সেভিয়া) ঘাঁটি দিয়ে ইসরায়েলগামী মার্কিন জাহাজ ও বিমানকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্পেনীয় সরকারের দাবি, এসব ঘাঁটি তাদের সার্বভৌমত্বের অধীনে এবং প্রত্যেকটি কার্যক্রম কেবল মাদ্রিদের অনুমোদনেই সম্ভব। ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে “গণহত্যা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশটি ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধ করেছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

স্পেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়, “রোটা ও মোরোন কোনো ব্যাকডোর নয়। এগুলো স্পেনীয় সেনা কর্মকর্তাদের কমান্ডে পরিচালিত হয় এবং এখানে প্রতিটি কার্যক্রম স্পেনের অনুমোদনসাপেক্ষ।” ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকেই ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করেছে মাদ্রিদ, পরে ২০২৪ সালের মে মাসে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর ধারাবাহিকতায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা শিল্পের সঙ্গে করা একের পর এক চুক্তি বাতিল করছে তারা।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ স্পেন ন্যাটোর অংশ হয়েও ওয়াশিংটনের সামরিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “ইসরায়েলগামী অস্ত্রবাহী মার্কিন জাহাজ ও বিমানের প্রবেশাধিকার সীমিত করা উদ্বেগজনক। স্পেন আমাদের মিত্র হয়েও ইসরায়েলের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করছে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালের সামরিক সহযোগিতা চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র কোনো তৃতীয় দেশে গোলাবারুদ বা বিস্ফোরক পাঠাতে চাইলে স্পেনের অনুমোদন নিতে বাধ্য। ২০১১ সালের সংশোধনীতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য করা হয় ফ্লাইটের উৎস, গন্তব্য, উদ্দেশ্য ও মালামালের বিস্তারিত তথ্য দিতে। চুক্তির ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে “বিতর্কিত মালামাল বা যাত্রী” বহনের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমোদন নেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। এই আইনি কাঠামোর কারণেই ইসরায়েলগামী মার্কিন অস্ত্র পরিবহন আটকে যায়।

এমনকি ২০২৫ সালের মার্চে ইসরায়েলগামী ছয়টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও রোটা ও মোরোন ঘাঁটি এড়িয়ে যায়। সেগুলো আজোরেস দ্বীপপুঞ্জে বিরতি দিয়ে জিব্রাল্টার প্রণালী হয়ে গন্তব্যে পৌঁছে। এর আগে ২০২৪ সালের জুনে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় মার্কিন ট্যাঙ্কার বিমানগুলো এই ঘাঁটি ব্যবহার করেছিল। তবে এবার স্পেনের অবস্থান স্পষ্ট: ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তায় তাদের ভূমি কোনোভাবেই ব্যবহার হবে না।

সূত্রঃ জেরুজালেম পোস্ট / এল পাইস

এম.কে
০২ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

আসছে আইফোনের নতুন মডেল

আরব দেশগুলোর আকাশপথ অবরোধে ইসরায়েলের বিপর্যয়ের আশঙ্কাঃ প্রতিবেদন

ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে লাফিয়ে উঠলেন ইলন মাস্ক, দিলেন সমর্থন