TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

টাওয়ার হ্যামলেটসে বাংলা সাইন স্থাপন নিয়ে নতুন করে দানা বাঁধল সাংস্কৃতিক বিতর্ক

লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে স্থাপিত বাংলা ভাষার সাইনবোর্ড ঘিরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির লন্ডন অ্যাসেম্বলির নেত্রী সুসান হল এক টুইটে এই সাইনকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন। তার বক্তব্য— “এটা ইংল্যান্ড, আমরা ইংরেজিতে কথা বলি। যারা এখানে থাকে, তাদের ইংরেজি শেখা উচিত এবং সমাজে একীভূত হওয়া প্রয়োজন।”

তার এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এটি বহুসংস্কৃতিবিরোধী ও বিভাজনমূলক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, স্টেশনের ওই সাইনে ইংরেজি ও বাংলা— দুই ভাষাতেই লেখা রয়েছে, কিন্তু যে ছবিটি টুইটারে পোস্ট করা হয়েছিল, সেটিতে ইংরেজি অংশটি ক্রপ করা ছিল।

বিতর্কের জবাবে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, “লন্ডনের বৈচিত্র্যই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। মেয়র গর্বিত এই শহরের প্রতিটি সংস্কৃতি ও সম্প্রদায়ের অবদানে। আমরা লন্ডনের বহুসংস্কৃতি উদযাপন অব্যাহত রাখব।”

হোয়াইটচ্যাপেলসহ বৃহত্তর টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ। ২০২২ সালের মার্চ মাসে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল নিজস্ব অর্থায়নে বাংলা-ইংরেজি দ্বিভাষিক সাইন স্থাপন করে, স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানকে সম্মান জানাতে।

তবে লন্ডনের গণপরিবহন ব্যবস্থায় ইংরেজি ছাড়াও অন্যান্য ভাষায় সাইনবোর্ড নতুন নয়। নব্বইয়ের দশকেই সাউথলে বড় পাঞ্জাবি জনগোষ্ঠীর কারণে পাঞ্জাবি ভাষায় সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০২১ সালে ক্রসরেল প্রকল্পের অংশ হিসেবে নেটওয়ার্ক রেল এগুলো নবায়ন করে।

সুসান হলের টুইটটি ইতোমধ্যে ২৪ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে এবং তা নিয়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই বলছেন, এই মন্তব্য কেবল একটি সাইনবোর্ড নয়, বরং লন্ডনের বহুসংস্কৃতিবিরোধী মনোভাবকে উস্কে দিচ্ছে।

২০২৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের মধ্যে সর্বাধিক বাংলাদেশি জনসংখ্যার এলাকা, যেখানে প্রায় ৩৪.৬ শতাংশ মানুষ নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এখানকার প্রায় ৪০ শতাংশ বাসিন্দা মুসলিম, যা ইংল্যান্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল ও সুসান হল— উভয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে, যদিও এখন পর্যন্ত তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সূত্রঃ মাই লন্ডন

এম.কে

আরো পড়ুন

‘বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’

যুক্তরাজ্যে আবাসন খাতে ধস নামার সম্ভাবনা

যুক্তরাজ্যে পেশাদার কর্মীরাও শ্রেণীবৈষম্যের শিকারঃগবেষণা