মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টকৃত ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় ওষুধ খাতে বড় ধরনের ধাক্কার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র হলো ভারতের ওষুধ রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার।
ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, যেকোনো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ওষুধ তৈরির কারখানা নির্মাণ শুরু না করলে, তাদের ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট ওষুধের আমদানিতে এই শুল্ক দিতে হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।
ভারতের ওষুধ রপ্তানির জন্য যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট ২৭.৯ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ রপ্তানির ৩১ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৮.৭ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ শুধু যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিল। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত সাশ্রয়ী জেনেরিক ওষুধের ৪৫ শতাংশ এবং বায়োসিমিলার ওষুধের ১৫ শতাংশ ভারতীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করে। ড. রেড্ডি’স, অরবিন্দো ফার্মা, জাইডাস, সান ফার্মা ও গ্ল্যান্ড ফার্মার মতো বড় ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মোট আয়ের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে পেয়ে থাকে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদিও নতুন শুল্ক প্রধানত ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্ট ওষুধকে লক্ষ্য করে, তবুও জটিল জেনেরিক এবং বিশেষায়িত ওষুধগুলো এই আওতায় আসবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ভারতীয় কোম্পানিগুলো সাধারণত কম লাভের মার্জিনে জেনেরিক ওষুধ সরবরাহ করে।
শুল্ক বেড়ে গেলে তাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা বা বীমা কোম্পানিগুলোর ওপর চাপানো হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম বৃদ্ধি, এমনকি ঘাটতিরও আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যার সঙ্গে রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রাখার কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা যুক্ত হয়েছে।
সূত্রঃ ট্রুথ স্যোশাল / এনডিটিভি
এম.কে
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫