তিস্তায় ন্যায্য জলের ভাগ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে চলেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে দু’পক্ষের চুক্তি এখনও স্বাক্ষর না হলেও দু’পক্ষের একটা বোঝাপড়া রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন একটা প্রকল্প ভারত সরকার বাস্তবায়ন করলে তিস্তা দিয়ে আরও কম পানি বাংলাদেশে আসার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন।
সাবরিন আশা প্রকাশ করেন, দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক এখন যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তাতে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি নিশ্চিত। সাবরিন বলেন, দিল্লি কী সাড়া দেয় তা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ঢাকা ভাববে, যেমন আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে পানি বিষয়ক সম্মেলনে আলোচ্য সূচিতে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে তিস্তা ও জলঢাকা নদীর পানি আরও বেশি কৃষি ক্ষেত্রে পৌঁছে দিতে দু’টি খাল কাটার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রাজ্য সরকার। বস্তুত প্রায় ৩২ কিলোমিটার খাল কেটে জলঢাকা ও তিস্তাকে সংযুক্ত করে এই মহাপরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তিস্তায় যে পানি আসা আরো কমবে সে বিষয়ে উভয় দেশেরই পরিষ্কার ধারনা রয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল শুষ্ক মরুভূমিতে পরিনত হবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো হলেও বাংলার রাজ্য সরকারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কানাঘুঁষা রয়েছে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুখ খোলার পরে ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, তারাও রাজ্য সরকারের এমন কোনও প্রকল্প নিয়ে অন্ধকারে আছে। অথচ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের প্রকল্পটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টিকে তাঁরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ভারত রাজ্য সরকারের মন্ত্রী একটা ‘পরিকল্পনা ’ তৈরি করছেন বলে জানান, যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনায় বসা হবে এবং এরপর প্রজেক্ট সম্পাদনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনও ভারত রাজ্যসরকারের কাছ থেকে জানতে চাইছে, প্রকল্পটি নিয়ে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে। এই প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর হতে পারে বিধায় বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্প নিয়ে এতো উদ্ধিগ্ন।