সুয়েলা ব্র্যাভারম্যানের উইন্ড্রাশ প্রজন্মের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা ও সুপারিশগুলি বেআইনী ছিল বলে রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্যের আদালত। বিচারক জানিয়েছেন অভিবাসীদের জন্য কমিশনার নিয়োগ না করা ‘স্পষ্টতই অন্যায়’ ছিল।
হাইকোর্ট তাদের রায়ে বলে, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান দুটি সুপারিশ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যে সুপারিশের উদ্দেশ্য ছিল উইন্ড্রাশ প্রজন্মের ক্ষতিগুলির কিছুটা মেরামত করা কিন্তু তা দেখেও না দেখার ভান করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে তথ্যমতে জানা যায়, উইন্ড্রাশ প্রজন্মের অভিবাসীদের জন্য কমিশন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ত্যাগ করা এবং বর্ডার এণ্ড ইমিগ্রেশন (আইসিআইবিআই) এর চিফ ইন্সপেক্টরের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি বাদ দেওয়া “উইন্ড্রাশ ক্ষতিগ্রস্থদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলেছে”।
উইন্ড্রাশ কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে উইন্ড্রাশ ভুক্তভোগী ট্রেভর ডোনাল্ড হোম অফিসের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ডোনাল্ড, যিনি ১৯৫৫ সালে জ্যামাইকাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১১ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে চলে এসেছিলেন। তিনি ২০১০ সালে দেশে তার মায়ের জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে চরম দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হন। তিনি জ্যামাইকাতে আটকা পড়েন এবং তাকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করা হয়।
উইন্ড্রাশ প্রজন্মের হাজার হাজার লোকেদের যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে ভুলভাবে চিহ্নিত করা হয়। সলিসিটার ওয়েন্ডি উইলিয়ামস কেলেঙ্কারীটি নিয়ে বলেন, বেশিরভাগ ক্যারিবিয়ান বাসিন্দাদের ভুলভাবে আটকে দেওয়া হয়েছিল, নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল, তাদের চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, ব্রিটেনে থাকার অধিকার থাকা সত্ত্বেও পেনশন, বেনিফিট এবং এনএইচএস স্বাস্থ্যসেবা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল।
বুধবার আদালতের রায়ে, মিসেস জাস্টিস হিদার উইলিয়ামস এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে অভিবাসীদের জন্য কমিশনার নিয়োগ না করা এবং উইন্ড্রাশ সম্প্রদায়ের জন্য আইসিআইবিআইয়ের ক্ষমতা বাড়িয়ে না দেওয়া ছিল অবৈধ এবং “সুস্পষ্টভাবে অন্যায়”।
ডোনাল্ডের প্রতিনিধিত্বকারী অলিভিয়া ডাফিল্ড বলেছেন, ” সরকারকে কেউ দোষারোপ করে না যদিও তা করা উচিত। উইন্ড্রাশ কেলেঙ্কারি মূলত কালো এবং বাদামী ত্বকের লোকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া এক বড় অন্যায় ছিল।”
উল্লেখ্য যে, ডোনাল্ডকে ২০১৮ সালে উইন্ড্রাশ কেলেঙ্কারির তদন্তের পরে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হয় এবং ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়ার আগে তাকে আই,এল,আর এর জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হন। তবে বিচারক উল্লেখ করেছেন যে প্রযোজ্য নির্বাসনের সময়কালে ডোনাল্ড তার বাচ্চাদের সাথে কাটানো মূহুর্ত জীবন হতে হারিয়েছেন। তাছাড়া তার কাউন্সিলের ফ্ল্যাট এবং তার বেশিরভাগ সম্পদ তিনি হারিয়েছেন। বিচারক এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে দুটি সংস্কারের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও তা নিয়ে অগ্রসর না হওয়ার কারণে সরকারের উইন্ড্রাশ সিদ্ধান্তটি “বাতিল করা উচিত”।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২০ জুন ২০২৪