-0.3 C
London
January 12, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ফ্রান্স সীমান্তে যুক্তরাজ্যের নীতিমালার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ

ফ্রান্স-যুক্তরাজ্য সীমান্ত ক্যালাইস অঞ্চলে প্রতিবাদকারীরা চ্যানেল পাড়ি থামানোর জন্য যুক্তরাজ্যের নীতিমালার নিন্দা করেছেন।

ফ্রান্সের সীমান্ত জুড়ে প্রতিবাদকারী গোষ্ঠীরা সীমান্ত নিরাপদে পারাপারের ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছে। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করতে গিয়ে ২০২৪ সালে ৭৭ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা যায়।

ফ্রান্সজুড়ে ৭০টিরও বেশি সংগঠন আগামীকাল শনিবার ক্যালাইস অঞ্চলে জড়ো হয়ে যুক্তরাজ্যের নীতিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে বলে জানা গিয়েছে।

২০২৪ সালে চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৭৭ জন প্রাণ হারিয়েছে, যা ২০১৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যা। যারা এই মৃত্যুগুলো পর্যবেক্ষণ করেন, তারা মনে করেন গত বছরের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স সীমান্তে ৮৯ জন মারা গিয়েছিল।

যুক্তরাজ্য সরকার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছে। তারা মানব পাচারকারী গোষ্ঠীদের ভাঙতে চায়। তবে গত বছরের রেকর্ড ঘেঁটে দেখা যায় ৩৬,৮১৬ জন ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে। এটি ২০২৩ সালের ২৯,৪৩৭ জনের তুলনায় অনেক বেশি।

ক্যালাইসে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ৭৩টি সংগঠন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী, ছাত্র এবং পরিবেশগত গোষ্ঠী থেকে এসেছে বলে জানা যায়। যেসব মানুষ চ্যানেল পার হতে চান, তাদের মধ্যে কিছু মানুষও এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।

আন্দোলনকারীরা যুক্তরাজ্য সরকারকে অনুরোধ করছে যাতে অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ এবং আইনগত পথ খুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ফরাসি সরকারকে তাদের প্রতি বৈরী নীতি বন্ধ করার এবং উপকূলজুড়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার সক্ষমতা উন্নত করার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিবাদকারী গোষ্ঠী।

প্রতিবাদকারী গোষ্ঠীরা মনে করেন, ফরাসি সৈকতে নজরদারি এবং পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিবাসীরা বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এখন তারা খাল বা আরও দূরের উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করছে, যা বিপজ্জনক অবস্থায় থাকার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে।

প্রতিবাদকারীরা আরও বলছে, ফরাসি পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে অভিবাসী ক্যাম্পগুলো উচ্ছেদ করছে। প্রায়ই ফরাসি পুলিশ অভিবাসীদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন ফোন, কম্বল এবং তাঁবু জব্দ করছে।

ক্যালাইসের মেয়র, নাটাশা বুচার, যিনি শহরে অভিবাসীদের উপস্থিতির বিরোধিতা করেন, তিনি এই প্রতিবাদ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

উত্তর ফ্রান্সে অভিবাসীদের সহায়তাকারী সংগঠন ল’অবার্জ দে মিগ্রাঁ-র সদস্য ফ্লোর জুদে বলেছেন, “মেয়র আমাদের প্রতিবাদ থামাতে পারেননি। এখানে ৭৩টি গোষ্ঠী একত্রিত হচ্ছে এবং ১৫০টি সংগঠন একটি চিঠিতে উত্তর ফ্রান্সে অভিবাসীদের হয়রানি এবং উপকূলের সামরিকীকরণের নিন্দা জানিয়েছে। আমরা যুক্তরাজ্য সরকারকে অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ পথ সরবরাহ এবং চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার সময় কতজন মারা যাচ্ছে তা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ক্যালাইস ফুড কালেকটিভের কমিটির সদস্য লাচলান ম্যাক্রা বলেন, “যুক্তরাজ্য সরকার কনজারভেটিভ পার্টির ‘স্টপ দ্য বোটস’ নীতির উত্তরাধিকার ধরে রেখেছে এবং স্টারমারের ‘অপরাধী চক্র ধ্বংস’ করার নিরলস আহ্বান সত্ত্বেও চ্যানেলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা বাড়ানো বা নিরাপদ পথ সম্প্রসারণে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। ব্রিটিশ জনগণের করের অর্থ জীবন রক্ষার দিকে বরাদ্দ করা উচিত, এমন অবস্থার সৃষ্টি করা নয়, যা আরও বেশি প্রাণহানি ঘটায়।”

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছেন, “সমুদ্রে প্রতিটি জীবন হারানো একটি শোকাবহ ঘটনা, এজন্যই আমাদের প্রচেষ্টা জীবন বাঁচানো এবং আমাদের সীমান্ত রক্ষা করার উপর কেন্দ্রীভূত।

মানুষ পাচারকারী চক্র কেবল লাভের দিকে মনোযোগী এবং আমরা দেখছি তারা আরও বেশি মানুষকে ভঙ্গুর ও বিপজ্জনক নৌকায় তুলে দিচ্ছে।

ফ্রান্সের সঙ্গে আমাদের যৌথ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো লোকজনকে নিজেদের এবং অন্যদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে বাধা দেওয়া। যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই নিপীড়নের শিকার মানুষদের জন্য বিভিন্ন পথ চালু রেখেছে, যেমন আমাদের ইউক্রেন, আফগানিস্তান এবং হংকং প্রকল্প।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১১ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

ক্রিসমাসে চরম বিপর্যয়ে ব্রিটেনের হোটেল ব্যবসা

অনলাইন ডেস্ক

মাতালদের কাছে মদ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ যুক্তরাজ্যে

নিউজ ডেস্ক

লন্ডনে ধেয়ে আসছে করোনার ‘ভয়ংকর’ রূপ ওমিক্রন

অনলাইন ডেস্ক