TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

বড় ধাক্কা টেকসই পরিবহনেঃ যুক্তরাজ্যে জিপকারের অপারেশন বন্ধের ঘোষণা

বিশ্বের বৃহত্তম কার-শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান জিপকার চলতি বছরের শেষে যুক্তরাজ্যে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে। এর ফলে লন্ডনজুড়ে জিপকারের ব্যবহৃত শেয়ার্ড ফ্লিট গাড়িগুলো আর গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে না। কোম্পানির মালিক মার্কিন গাড়িভাড়া গ্রুপ এভিস বাজেট নিশ্চিত করেছে যে ৩১ ডিসেম্বরের পর জিপকার নতুন কোনো বুকিং গ্রহণ করবে না।

 

জিপকারের এই সিদ্ধান্ত টেকসই ব্যক্তিগত পরিবহনের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোকে বড় ধাক্কা দেবে। বহু ছোট কার-ক্লাব জিপকারের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যক্তিগত গাড়ি শেয়ার করত, যা এখন কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। কোম্পানির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তাদের যুক্তরাজ্য শাখায় গত বছর ৭১ জন কর্মী কাজ করেছেন।

জিপকার ইউকের জেনারেল ম্যানেজার জেমস টেইলর গ্রাহকদের পাঠানো ইমেইলে জানিয়েছেন, তাদের যুক্তরাজ্য অপারেশন বন্ধের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং কর্মীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বিকল্প কার-শেয়ারিং সুবিধা খুঁজতে CoMoUK নামের শেয়ার্ড ট্রান্সপোর্ট দাতব্য সংস্থার ওয়েবসাইট ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছেন।

সম্প্রতি বেশ কঠিন সময় পার করছে কার-শেয়ারিং শিল্প। গত মার্চে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এভিস বাজেট নীরবে জিপকারের মূল্যায়ন কমিয়েছে, কারণ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারে কোম্পানির রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে। এ অবস্থায় জিপকার (ইউকে) ২০২৪ সালে ১১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড লোকসানের রিপোর্ট দেয়, যা বন্ধের প্রস্তাবকে আরও জোরালো করে।

জিপকার জানিয়েছে, বিদ্যমান সব বুকিং, বিশেষ করে বড়দিনের বুকিং, সম্মানিত হবে। তবে যেসব বুকিং আগামী বছরের মধ্যে চলবে, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হবে। পাশাপাশি, ৩১ ডিসেম্বরের পরের সময়ের জন্য যেসব গ্রাহক সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়েছেন, সেই অংশ ফেরত দেওয়া হবে।

মহামারির সময় ঘণ্টা-ভিত্তিক অ্যাপ-ভিত্তিক গাড়িভাড়া সেবা জনপ্রিয়তা পায়, যেখানে জিপকার, এন্টারপ্রাইজ কার ক্লাব ও শেয়ার নাউ–এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে নিজস্ব গাড়ির বহর পরিচালনার উচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা গাড়িগুলো পরিচালনার জটিলতার কারণে লাভ টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছিল তারা।

যুক্তরাজ্যে জিপকার তাদের ‘ফ্লেক্স’ মডেলের মাধ্যমে বিশেষভাবে পরিচিত ছিল, যেখানে নির্দিষ্ট পার্কিং স্পট ছাড়াই শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় গাড়ি পার্ক করে ব্যবহার করা যেত। টেকসই পরিবহনের ধারণায় কার-শেয়ারিংকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হলেও, বাজারিক চ্যালেঞ্জের মুখে যুক্তরাজ্যে জিপকারের কার্যক্রমের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ গ্রেফতার ৯০

যুক্তরাজ্যে হোম অফিসের চাকরি থেকে বরখাস্ত রিফর্ম ইউকের কাউন্সিলর পল বিন

কঠিন হচ্ছে অভিবাসীদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অর্জন