5.9 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

বাংলাদেশে একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে ভিডিওকলে থাকাকালীন সময়ে কুপিয়ে হত্যা

যুক্তরাজ্যের একজন প্রবাসী বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ফেরত এসেছিলেন। কিন্তু নিকটাত্মীয়দের রোষানলে পরে দুই সন্তানের বাবা এই ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে জীবন হারাতে হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়।

হত্যার শিকার আবদুল শহীদের বোন দাবি করেন ৩৯ বয়সী শহীদকে তার বোনের সাথে লাইভ ফোনালাপ চলাকালীন সময়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। তারা আবদুলের গলা ও মাথায় ১০ বারের বেশি আঘাত করে যাতে তার মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। খবরে জানা যায়, আবদুল শহীদের বোন কভেন্ট্রি হতে তার ভাইয়ের সাথে ভিডিও কলে যখন কথা বলছিলেন তখন তার উপর হামলা করা হয়।

আবদুল শহীদের ৪৪ বছর বয়সী বোন মিনা মজিদ জানান, ‘আমি হত্যাকারীদের দেখেছি যারা ভিডিও কল চলাকালীন সময়ে আমার ভাইয়ের উপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আমি রক্তাক্ত আমার ভাইকে চোখের সামনে আক্রমণের শিকার হতে দেখেছি। আমি চিৎকার করে তাদের থামাতে চেষ্টা করেছিলেম কিন্তু ৫০০০ মাইল দুর থেকে আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিল না। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজটি মেট্রো ডট কমকে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আবদুল সর্বপ্রথম বাংলাদেশে আসেন ২০১৯ সালে। প্রথমবার দেশে আসার পর তিনি বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে যান। সেই দেশপ্রেমই কাল হয়ে দাঁড়ায় আবদুলের জন্য। দুই সপ্তাহের জন্য হলিডেতে এসে তিনি ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। নিজের বাবার ভিটাকে সংষ্কার করার কাজে হাত দেন তিনি।

তিনি বাংলাদেশে বিয়ে করেন বলেও জানা যায়। মাত্র চার মাস আগে আবদুলের দুই জমজ কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আবদুল শহীদ স্থানীয় দরিদ্র লোকদের সাহায্য করতে তার দুই হাত প্রসারিত করে দেন। তিনি ছিলেন খুব দয়ালু ও পরোপকারী। তিনি বিভিন্ন লোকেদের ঘর তৈরি করে দেন, তাছাড়া মসজিদ ও এতিমখানাতেও সহায়তা প্রতিনিয়ত করতেন বলে তার বোন নিশ্চিত করেন।

মিনা আরো বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে সে পুরো গ্রামকে দাওয়াত করে খাওয়ায়। সে রমজান মাসে দরিদ্র পরিবারদের মসুর ডাল, চাল, তেল, পেঁয়াজ বিতরণ করেছিল।

তবে আবদুলের বোন জানান, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে আবদুলের সকল স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশের আত্মীয়স্বজনরা আবদুলের বাড়িটি যে সম্পত্তির উপরে অবস্থিত তার অংশের মালিকানা দাবি করে। আতংকিত করার জন্য তারা আবদুলের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। তারা আবদুলের পোষা কুকুরকেও হত্যা করেছিল বলে জানা যায়।

আবদুলের বোন মিনা জানান হত্যাকারী ৫ ব্যক্তিকেই তিনি চিনেন তবে তাদের আত্মীয় স্বজন অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুলিশ তদন্তে কিছুই আসে নি এমন কি কাউকে গ্রেফতার করাও হয় নি। তিনি জানান, বাংলাদেশের পুলিশ জানিয়েছে তারা সন্দেহভাজন হিসাবে কাউকে সনাক্ত করতে পারছে না।

যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য সরকার ‘একজন ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে। একজন ব্রিটিশ নাগরিকের হত্যাকান্ডের বিচার হওয়ার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে তারা যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য যে, আবদুল শহীদ প্রথম ব্যক্তি নন যিনি ব্রিটিশ নাগরিক হয়েও বাংলাদেশে এসে এই ধরনের নৃশংস ঘটনার শিকার হয়েছেন। এর আগে ৫১ বছর বয়সী রাফিকুল ইসলাম এবং তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে মাহিকুল ২০২২ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে বিষক্রিয়ার শিকার হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা গিয়েছিলেন। তার মেয়ে সামিরা একই বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন পর মারা যায়। পূর্ব লন্ডনের ৪৩ বছর বয়সী রেহানা বেগমকে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে চক্রান্ত করে হত্যা করা হয়।

সূত্রঃ মেট্রো

এম.কে
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আরো পড়ুন

আদাল‌তে কাঁদলেন এম‌পি আপসানা

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশের ত্রিশ ব্যাংকের এমডি একযোগে আমেরিকা যাচ্ছেন

কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌড় হতে প্রীতি প্যাটেল বাদ পড়েছেন