6.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশশীর্ষ খবর

বাংলাদেশ নির্বাচন, দুই দলকে নিয়ে নতুন ফর্মুলায় কূটনৈতিকরা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি নতুন ফর্মুলা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলাপ-আলোচনা চলছে। কূটনৈতিক পাড়া থেকে উদ্ভাবিত এ ফর্মুলা নিয়ে এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। আলাপ-আলোচনার অংশ হিসেবে গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির তিন নেতাকে মার্কিন দূতাবাসে ডেকে নেয়া হয়। তাদের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস। এই বৈঠকের পর পরই বিভিন্ন মহলে চাউর হয়েছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প একটি জায়গায় আসতে চাচ্ছেন কূটনৈতিক মহল এবং এই জায়গায় সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমতে পৌঁছানোর জন্য তারা কাজ শুরু করেছেন।

বিএনপি বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি কোনভাবেই তারা মেনে নেবে না বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে একটি মৃত বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ রকম পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রধান দুই দলের দুই মেরুতে অবস্থান রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। আর এই অনিশ্চয়তা থেকেই আগামী নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই শঙ্কা দূর করতেই পশ্চিমা দূতাবাসগুলো একটি গ্রহণযোগ্য ফর্মুলার জন্য কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

উল্লেখ্য যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কি কি করনীয় তা নিয়ে দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কূটনীতিকরা। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে অত্যন্ত তৎপর। এই বৈঠকের প্রেক্ষাপটেই কূটনীতিকরা একটি নতুন ফর্মুলা তৈরির কাজ চূড়ান্ত করেছেন। যে ফর্মুলা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সময় প্রধানমন্ত্রী নিষ্ক্রিয় থাকবেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে মন্ত্রিসভা সেই মন্ত্রিসভার সদস্যরা রুটিন কাজের বাইরে কোন কাজ করবেন না, রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী নির্বাচন কাজ পরিচালনা করবেন এবং যে কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে তারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার একটি বড় ইস্যু হিসেবে এসেছে। সমঝোতা প্রস্তাবে নির্বাচনকালীন সময়ে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের আপত্তি রয়েছে। তবে কূটনীতিক মহল মনে করছে যে, এই জায়গায় আওয়ামী লীগ হয়ত শেষ পর্যন্ত ছাড় দিবে।

 

 

 

 

 

মূলত নতুন ফর্মুলায় যেটি করা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রীসহ তার মন্ত্রিসভা নিষ্ক্রিয় থাকবে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া হবে, সংসদ সদস্যরা আর সংসদ সদস্য থাকবেন না, রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি উপদেষ্টামন্ডলী নির্বাচন পরিচালনা করবেন এবং রুটিন কাজের মধ্যেই নির্বাচন পরিচালিত হবে। নির্বাচনের মাঠে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক বিদেশি কূটনীতিকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করবে। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভোটের পরও নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা প্রদান সহ নির্বাচন আইনের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেই প্রস্তাব অনুমোদন করা হলেই একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে বলে কূটনীতিকরা ধারণা করছেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুকে বাদ দিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ফর্মুলার জন্য তারা কাজ করছেন এবং প্রধান দুই দলকে কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।

আরো পড়ুন

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আবারও গ্রেফতার

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ

‘অনির্ভরযোগ্য আচরণের’ জন্য আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ১৪৮ অ্যাকাউন্ট-পেজ সরিয়ে দিলো ফেসবুক