আশ্রয়প্রার্থী সেজে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর কেউ কেউ আইনি বাধা অমান্য করে আয়ারল্যান্ডে গিয়ে দ্বিতীয়বার সরকারি আর্থিক সহায়তার আবেদন করছেন। সম্প্রতি আফগান নাগরিক জাফর ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে ঢুকে ১৬ জুন আশ্রয়ের আবেদন করেন। অথচ এক মাস পার না হতেই ম্যানচেস্টার থেকে বিমানে চড়ে বেলফাস্ট হয়ে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা করেন তিনি।
বেলফাস্ট থেকে ডাবলিনগামী এম’ওয়ান হাইওয়েতে আয়ারল্যান্ডের অভিবাসন পুলিশ জাফরকে আটক করে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ডাবলিনে ইন্টারন্যাশনাল প্রোটেকশন অফিসে দ্বিতীয়বারের মতো আশ্রয়ের আবেদন করতে যাচ্ছিলেন। একই দিনে সাতজন অভিবাসীকে একই উদ্দেশ্যে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের সময় আটক করা হয়।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ‘অপারেশন সনেট’ অভিযানের আওতায় মোট ৪৪৩ জনকে যুক্তরাজ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গার্দা ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ব্যুরো (GNIB) জানায়, এরা সবাই ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেও পরবর্তীতে আয়ারল্যান্ডে এসে নতুন করে সরকারি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
আরেকজন অভিবাসী, হাসান, যিনি নিজেকে আয়ারল্যান্ডে আফগান পরিচয়ে পরিচয় দিলেও, যুক্তরাজ্যে তিনি পাকিস্তানি হিসেবে আশ্রয় পেয়েছেন। তাকে আটক করার সময় তার কাছে তিনটি মোবাইল ফোন ছিল। ফোনের ভেতরে পাকিস্তানি পাসপোর্টের ছবি পাওয়া যায়।
GNIB জানায়, হাসান যুক্তরাজ্যে কাজও করতেন এবং নিয়মিত আয়ারল্যান্ডে যেতেন বেনিফিট তোলার জন্য। পরে তার তথ্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয় এবং তাকে আর্থিক সহায়তা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যাতে কমন ট্রাভেল এরিয়া (CTA) ব্যবহারের মাধ্যমে আশ্রয়প্রার্থীদের এক দেশ থেকে আরেক দেশে অবিলম্বে ফেরত পাঠানো যায়। জুন মাসেই আয়ারল্যান্ডে করা ৬,০০০ এর বেশি আশ্রয়ের আবেদনের মধ্যে ৯০ শতাংশই এসেছে উত্তর আয়ারল্যান্ড হয়ে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “অপরাধী চক্রগুলো যেভাবে আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যবহার করে অর্থ কামাচ্ছে, তা ঠেকাতে আমরা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে মিলে কাজ করছি।” গার্দা এবং ব্রিটিশ সীমান্ত কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস
এম.কে
২১ জুলাই ২০২৫