6.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ব্রিটেনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এসাইলাম আবেদন বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে

ব্রিটেনে পড়তে আসা প্রায় এক তৃতীয়াংশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এসাইলামের আবেদন করেছেন। সেইসব শিক্ষার্থীদের যে ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্পন্সর করেছিল তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই ফাঁস হওয়া পরিসংখ্যান ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। উচ্চ শিক্ষাকে অভিবাসনের রুট হিসাবে ব্যবহার করা আশঙ্কার মূল কারণ বলে জানা যায়।

হোম অফিস ডাটাবেসের গোপন পরিসংখ্যানের ১২ মাসের তথ্যানুযায়ী, মার্চ ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের এসাইলাম আবেদনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৬,১৩৬টি এসাইলাম আবেদন করেছিল বিদেশী শিক্ষার্থীরা, যা এর আগের বছর হতে চারগুণ বেশি। এরমাঝে ২,১৯৫ জন শিক্ষার্থীকে স্পন্সর করেছিল পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি এডুকেশন এজেন্সি।

স্টাডি গ্রুপ ইউকে ৮০৪ জন বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা স্পনসর করেছিল যারা পরে এসাইলাম আবেদন করে। এই সংস্থা হতে ৬৪২ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং পাকিস্তান হতে ১৬২ জন শিক্ষার্থী এসাইলাম আবেদন করে।

স্টাডি গ্রুপের ওয়েবসাইটে তাদের নিজেদের বিষয়ে লিখেছে ‘শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্বজুড়ে ৫০ টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশ্বস্ত অংশীদার’। ফার্মটি যুক্তরাজ্যের হোম অফিস কর্তৃক বিদেশী ভিসা আবেদনকারীদের স্পনসর করার জন্য ইউকেভিআই কর্তৃক লাইসেন্সপ্রাপ্ত।

তাছাড়া ২০২৩ সালে আশ্রয় দাবি করা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯৫ জন শিক্ষার্থীদের পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটি স্পনসর করেছিল। যাদের মধ্যে ২৫২ জন বাংলাদেশি, আফগানিস্তানের ৫৪ জন, ক্যামেরুনের ৩৮ জন এবং পাকিস্তানের ২৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে ৩১০ জন শিক্ষার্থীদের স্পন্সর করা ডি মন্টফোর্ট ইউনিভার্সিটি, এরপরে আছে হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় ২৭৫ জন, কোভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয় ২১৭ জন এবং ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ আর্টের ১৯৪ জন।

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান ব্রিটেনে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী উচ্চতর শিক্ষা খাতকে ব্যবহার করছে অভিবাসনের জন্য, বলে সমালোচনা করেছিলেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন।

তিনি এই বছরের জানুয়ারি মাসে বলেছিলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অভিবাসন বিক্রি করছে, শিক্ষা নয়।’

ডিসেম্বরে বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লেভারলি ‘স্নাতক ভিসা’ নিয়ে পর্যালোচনার ঘোষণা দেন। তাছাড়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ডিপেন্ডেন্ট আনা নিয়ে বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়। গ্রেজুয়েশন রুটে কোর্স সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের ব্রিটেনে দুই বছর পর্যন্ত কাজ করার অনুমতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন জেমস ক্লেভারলি।

সর্বশেষ হোম অফিসের তথ্য দেখায় যে গত বছর স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৪,৪৭,৬৭৩ জন। যা ২০২২ সালের তুলনায় পাঁচ শতাংশ কম তবে কোভিড মহামারীর সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।

পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন: ‘ ভিসা স্যুইচিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হোম অফিসের অন্তর্ভুক্ত বিধায় তারা অনুমতি দেয় শিক্ষার্থীদের এসাইলাম আবেদন করার। অনুমতি আছে বিধায় অনেকে এসাইলাম আবেদন করে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুই করার থাকে না। তাই এই ব্যর্থতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে তাই লাভ নেই।’

একটি সমীক্ষা গোষ্ঠীর মুখপাত্র বলেছেন, ‘ইউকেভিআই লাইসেন্সধারী হিসাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্পনসর করার ট্র্যাক রেকর্ড সহ, আমরা আমাদের দায়িত্বগুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিই। অধ্যয়নের জন্য অনুমোদিত ব্যক্তিদের এসাইলামে স্যুইচ করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।

উল্লেখ্য যে, কনজারভেটিভ সরকার ইমিগ্রেশন নিয়ে ইতোমধ্যে মারাত্মক চাপে রয়েছে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের বৈতরণি পার হওয়ার জন্য তাই তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। যদিও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন এই আসছে নির্বাচনে কনজার্ভেটিভ পার্টির ভরাডুবি ঘটবে।

সূত্রঃ ডেইলি মেইল

এম.কে
১৯ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে ‘ইনোভেটিভ পার্টনারশিপের’ পরিকল্পনায় ইটালি-ব্রিটেন

আইন করেও কমানো যাচ্ছে না শরনার্থীদের অবৈধ প্রবেশ

জীবনযাত্রার সংকটে ব্রিটিশরা: ৫০ বছরে বেনিফিটের মান সর্বনিম্ন