যুক্তরাজ্য সরকার নতুন ভিসা নিয়ম বাস্তবায়ন করেছে যা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা কেয়ারকর্মী, ওয়ার্ক পারমিট, নির্ভরশীল ও শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। দেশজুড়ে তীব্র অভিবাসন-বিরোধী মনোভাব, অভিবাসনকে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহারের দক্ষিণপন্থিদের প্রবণতা এবং ব্রিটেনে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বুধবার এ ঘোষণা এলো।
৯ এপ্রিল থেকে যেসব কেয়ার সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে চান তাদের প্রথমে প্রমাণ করতে হবে যে তারা এমন কাউকে নিয়োগ করার চেষ্টা করেছেন যিনি স্থানীয় বা বর্তমানে ইউকেতে অবস্থান করছেন। সরকার আশা করে এই পরিবর্তনগুলো “বিদেশি নিয়োগের ওপর নির্ভরতা শেষ করতে” সাহায্য করবে এবং ব্রিটেনে রেকর্ড মাত্রার অভিবাসন হ্রাস করবে।
দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য ন্যূনতম মজুরির প্রয়োজনীয়তাও বাড়ানো হচ্ছে। ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির প্রতিফলন হিসেবে, এপ্রিল থেকে এটি প্রতি বছর ২৩,২০০ পাউন্ড থেকে বেড়ে £২৫,০০০ (অথবা প্রতি ঘণ্টায় £১২.৮২) হবে।
প্রতিমন্ত্রী স্টিফেন কিনক বলেছেন— “আন্তর্জাতিক কেয়ারকর্মীরা আমাদের সামাজিক যত্ন-কর্মীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা তাদের দেশজুড়ে মানুষদের সহায়তা করার জন্য কাজ করার প্রশংসা করি।”
প্রতিমন্ত্রী স্টিফেন কিনক বলেন, “যুক্তরাজ্যে ইতিমধ্যেই অবস্থান করা স্থানীয় কেয়ারকর্মীদের অগ্রাধিকার দিলে তারা কাজে ফিরে আসবে, আন্তর্জাতিক নিয়োগের ওপর আমাদের নির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং নিশ্চিত করা হবে যে আমাদের সামাজিক সেবা খাতে প্রয়োজনীয় পেশাদার রয়েছে।”
স্বল্পমেয়াদী ছাত্র রুটে পরিবর্তন, যা কেসওয়ার্কারদের ভিসা আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানা যায়। কেসওয়ার্কারদের সন্দেহভাজন ভিসা আবেদনপত্র বাতিল করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। সিস্টেমের অপব্যবহার রোধ করার লক্ষ্যে এটিও নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিদেশ থেকে আসা যারা ছয় থেকে ১১ মাস ধরে ব্রিটেনে ইংরেজি শিখছেন তারা এই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে যে, যারা আসলে পড়াশোনা করতে চান না বা কোর্স শেষে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে চান না, তাদের দ্বারা এই রুটের অপব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
বারবার অভিবাসন-কর্মসংস্থান আইন ভঙ্গকারী কোম্পানিগুলোকে বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে বলেও জানা যায়। তথ্যানুযায়ী জানা যায়, জুলাই ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সালের মধ্যে, সরকার যত্ন খাতে ৪৭০টিরও বেশি স্পন্সর লাইসেন্স বাতিল করেছে।
অভিবাসন ও নাগরিকত্বমন্ত্রী সীমা মালহোত্রা বলেন, “যারা আমাদের প্রাপ্তবয়স্কদের যত্ন খাতে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছেন তাদের শোষণ থেকে মুক্ত থাকার সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। আমরা ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি যাতে নিয়োগকর্তারা নিয়ম লঙ্ঘন করতে না পারেন বা আন্তর্জাতিক কর্মীদের শোষণ করতে না পারেন।”
এই বছরের শুরুতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে কঠোর নতুন অভিবাসন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর থেকে বিদেশ থেকে প্রায় ৪ লাখেরও কম ভিসাপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের কর্ম বা শিক্ষা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন।
অস্থায়ী তথ্যে দেখা গেছে যে ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয়েছিল, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫শ থেকে প্রায় অর্ধেক কম।
এম.কে
১৩ মার্চ ২০২৫