হিন্দু মেয়ে ও মুসলমান ছেলের বিয়েকেই ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ‘লাভ জিহাদ’ বলছেন। তাদের ব্যাখ্যায়, হিন্দু নারীদের ধর্মান্তর ঘটানোই এর একমাত্র উদ্দেশ্য। এই আইনের আওতায় কমপক্ষে ১০ জন মুসলিম পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে সেদেশের পুলিশ।
উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকার বিয়ের উদ্দেশ্যে ধর্মান্তর রুখতে গত ২৪ নভেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে। বিয়ের উদ্দেশ্যে জবরদস্তি অথবা ছলচাতুরীর মাধ্যমে হিন্দু মেয়ের ধর্মান্তর করানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে ক্ষেত্রবিশেষে ১০ বছরের সাজা হবে।
ডিসেম্বরের প্রথম দিকে আইনটি কার্যকর হওয়ার একদিন পর, লখনৌ শহরে হিন্দু নারী রায়না গুপ্ত এবং মুসলিম পুরুষ মোহাম্মদ আসিফের মধ্যে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানকে সহিংসভাবে থামিয়েছে পুলিশ। তাদের পরিবারের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বর কনে কেউই ধর্ম পরিবর্তন করেনি, তারপরেও বিয়ে বন্ধ করা হয়।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ দু’জন মুসলিমের বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে সারা রাত পুলিশি হেফাজতে রাখা হয় এবং অভিযোগ করা হয় যে পুলিশ তাকে চামড়ার বেল্ট ব্যবহার করে কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করেছে। পরিবার জন্মসূত্রে তার কনে মুসলিম হওয়ার প্রমাণ দেওয়ার পরেই তারা হায়দার আলীকে মুক্তি দেয়।
উত্তরপ্রদেশে আইনে একজন মুসকান জাহান (২২) নামের একজন নারীকে আটক করে পুলিশ। আটক হওয়ার পর পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই নারীর গর্ভপাত ঘটেছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছে। তার স্বামী রশিদকে গ্রেপ্তারের পর অন্য কোথাও রাখা হয়েছে। মুসকানকে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলমান করার পর বিয়ে করার অভিযোগে রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই নারী বলেন, পৃথিবীতে আসার আগেই তার শিশুটিকে বিদায় করে দিয়েছে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতা।
উত্তরপ্রদেশের এই তাণ্ডব থেকে এই আশঙ্কা প্রবলভাবে বেড়েছে যে ‘লাভ জিহাদ’ আইনটি মুসলমানদের টার্গেট করে বানানো হয়েছে। এই নতুন আইনে কোনও হিন্দুকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। উত্তর প্রদেশসহ আরও চারটি রাজ্যে লাভ জিহাদবিরোধী আইনের খসড়া চূড়ান্তের কাজ চলছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
১৫ ডিসেম্বর ২০২০
এসএফ