যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন যে,মাইক্রোসফটের মাধ্যমে টিকটক অধিগ্রহণের আলোচনা চলছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের কারণে ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়ে দেন যে মাইক্রোসফট টিকটককে অধিগ্রহণের জন্য আলোচনা করছে, এবং তিনি চান যে অ্যাপটির জন্য একটি বিডিং যুদ্ধ হোক। টিকটকের প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, সেগুলি চীনের প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন হওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মুখে পড়েছে। ১৯ জানুয়ারী একটি নতুন আইন কার্যকর হয়, যার আওতায় বাইটড্যান্সকে টিকটক বিক্রি করতে হবে অথবা যুক্তরাষ্ট্রে তা নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপটি নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে “বিডিং যুদ্ধ” বা দরকষাকষি দেখা যেতে পারে। টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটডান্সের কাছ থেকে মার্কিন কার্যক্রম কিনে নেওয়ার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে ট্রাম্প ও তার পূর্বসূরি জো বাইডেন জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, মাইক্রোসফটের এই সম্ভাব্য উদ্যোগে তার সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, “টিকটকের প্রতি বেশ কয়েকটি কোম্পানির আগ্রহ রয়েছে।” তিনি আশা করছেন, এই আলোচনার মাধ্যমে টিকটকের জন্য একটি ইতিবাচক সমাধান আসবে, যেখানে চীনের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।
গত সপ্তাহে, ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে বাইডেন প্রশাসনের টিকটক নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেন, যা একসময় যুক্তরাষ্ট্রে ১৭০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপটিকে বন্ধ করেছিল। তবে, অ্যাপটির ওপর চীনা প্রভাব কমাতে এবং ব্যবহারকারীর ডেটার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাইটডান্সকে এটি বিক্রি করার জন্য চাপ অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে, বাইটডান্স প্রথম মাইক্রোসফটের কাছে টিকটক বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। মাইক্রোসফটের সিইও এটিকে “সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনা” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়, টিকটক বিক্রির জন্য ওরাকলকেও বিবেচনা করা হয়েছিল, যদিও চূড়ান্ত চুক্তি কখনো হয়নি।
বর্তমানে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন যে, টিকটকের জন্য আরও অনেক পক্ষ আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং তিনি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান নেতাদের একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা দেখব কী হয়। চীনের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছাড়া যদি আমরা এই অ্যাপটি কিনে নিতে পারি, তবে এটি অনেক মানুষের কাজ ও কণ্ঠস্বর রক্ষা করবে।”
টিকটককে ঘিরে মাইক্রোসফট এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দরকষাকষি মার্কিন প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সিদ্ধান্ত কেবল প্রযুক্তির দুনিয়া নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং রাজনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি, রয়টার্স
এম.কে
২৮ জানুয়ারি ২০২৫