ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে যুক্তরাজ্য জুড়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষ সংকটে পড়েছেন। তারা প্রত্যেকে প্রয়োজনীয় বিল পরিশোধ করার সাথে সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের টিকিয়ে রাখতে।
খবরে বলা হয়, যদিও ১৫ ই মার্চ জেরেমি হান্টের বাজেটে গ্রাহকদের জন্য কিছু সুসংবাদ ছিল, চ্যান্সেলর ঘোষণা দিয়েছিলেন যে এনার্জি প্রাইসের উপর সরকার ভর্তুকি দিবে। কিন্তু তা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
চ্যান্সেলর সংসদকে বলেন, “জ্বালানি বিল একটি পরিবারের জন্য যাতে বোঝা হয়ে না যায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নিবে কনজারভেটিভ সরকার। কিন্তু সরকারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
তিনি বলেন, ” জুলাই থেকে এনার্জি বিলের উপর ভর্তুকি দেয়া যায় কিনা ভেবে দেখছে সরকার। যদি এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হয় তাহলে পরিবারগুলির উপর চাপ কিছু কমিয়ে দেবে, পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতিও কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে।”
এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকারী সহায়তা ব্যতীত গড় পরিবার জানুয়ারী থেকে এপ্রিলের মধ্যে বার্ষিক কয়েক হাজার পাউন্ড পর্যন্ত বিল প্রদান করতে হয়। শীতকালে ঘরকে উষ্ণ রাখতে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের প্রয়োজন হয় প্রত্যেকটি পরিবারের।
সিটিজেন এডভাইস চিফ ডেম ক্লেয়ার মরিয়ার্টি বলেন, যদিও চ্যান্সেলরের কথা একটি ইতিবাচক ইশারা দেয় তথাপি বর্তমান সরকার কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়। তিনি বলেন সরকার এই মূহুর্তে এনার্জি বিল সাপোর্ট স্কিম প্রত্যাহারের অর্থ এখনও এপ্রিল থেকে গড় মাসিক বিল ৬৭ পাউন্ড বেড়ে যাওয়া। এখন পর্যন্ত কয়েক মিলিয়ন পরিবার তাদের এনার্জি বিল পরিশোধে অক্ষম তাই সরকারের উচিত এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজে বের করা।
তিনি যোগ করেন, অনেক লোক, বিশেষত স্বল্প আয়ের যারা, তাদের বিল পরিশোধের জন্য নয় বরং তাদের ঘরগুলি আরও নিরাপদ এবং উষ্ণতর করার জন্য চলমান সহায়তা প্রয়োজন।
হারগ্রিভস ল্যানসডাউন প্রধান সারা কোলস মন্তব্য করেন, “ ইতিমধ্যে ৪৮ শতাংশ লোক তাদের এনার্জি বিলগুলি প্রদান করতে অসুবিধা বোধ করছে। সরকার ভর্তুকি উঠিয়ে নিলে কিংবা জনগণকে এনার্জি বিলে সাপোর্ট না দিলে প্রতিমাসে অতিরিক্ত ৬৭ পাউন্ড পরিশোধ করাই তাদের জন্য হবে দুঃস্বপ্নের মতো।”
তিনি যোগ করেন, এছাড়াও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে এসেছে এই শীতে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলিকে আর্থিক সহায়তা সরবরাহ করেছে এমন আরও দুটি স্কিমও মার্চের শেষের দিকেও মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। এই দুটি স্কিম বন্ধ হলেও জনগণ বিপদে পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি হারটি সুপারমার্কেটের তাকগুলির দিকে তাকালেই অনুধাবন করা যায়। অন্যদিকে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের মুদ্রানীতি কমিটি সুদের হারকে ৪ শতাংশে উন্নীত করেছে।
সবমিলিয়ে একধরনের অর্থনৈতিক দৈন্যতা ব্রিটেনের সার্বিক পরিস্থিতির ক্ষতি করে চলেছে। উল্লেখ্য যে ব্রেক্সিট পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এই অর্থনৈতিক দৈন্যতা কনজারভেটিভ সরকারকে বিপদগ্রস্ত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।