TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার গ্রুপের প্রধানমন্ত্রীকে নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রদান

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ এসাইলাম আবেদন ও ব্যাকলগ ক্লিয়ারের জন্য বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আছে একটি পরিকল্পনা প্রদান করেছে।
মানবাধিকার গ্রুপের পক্ষ থেকে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেখানে শরণার্থী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলি কেয়ার স্টারমারের কাছে আশ্রয় নীতির একটি নতুন ব্লু প্রিন্ট নিয়ে লিখেছেন। যাতে পূর্ববর্তী সরকারের এসাইলাম আবেদন সংক্রান্ত নীতিমালা থেকে পথ পরিবর্তনের পরিষ্কার দিকনির্দেশনা রয়েছে বলে জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
এই চিঠিতে ৩০০ জনের বেশি সুশীল সমাজের নাগরিক স্বাক্ষর প্রদান করেছেন বলে জানা যায়। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ৫৩৪ জন ব্যক্তিও উক্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
যেখানে নয়টি মূল দাবি উত্থাপন করা হয় যা লেবার সরকার কর্তৃক গৃহীত হলে গত কনজারভেটিভ সরকারের অন্যতম বিতর্কিত ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পরিবর্তনের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিবে বলে মতামত দিয়েছেন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা।
এই চিঠিতে বলা হয়, “ আমরা তৃণমূল সংগঠন এবং ব্যক্তি হিসাবে যুক্তরাজ্য জুড়ে আমাদের সম্প্রদায়ের দৃঢ় অবস্থানের উপর ভিত্তি করে লিখছি। যুক্তরাজ্যে নিজেদের সুরক্ষায় যারা অবস্থান নিতে আগ্রহী তাদের স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত। বছরের পর বছর ধরে, আমরা এমন লোকদের সমর্থন করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি যারা প্রতিকূলনীতি দ্বারা নির্মমতার শিকার হয়েছে। আমরা চাই নতুন সরকার রাজনৈতিক লাভের উর্ধ্বে উঠে সঠিক এসাইলাম আবেদনকারীদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে তাদের সুরক্ষা সেবা দিক।
ক্রমাগত অকার্যকর, নিষ্ঠুর আইনগুলি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার অধিকারকে কার্যকরভাবে নিভিয়ে দিয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে বিভিন্ন বার্জ ও আশ্রয়কেন্দ্রে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যেখানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসাইলাম বেকলগের স্তুপ পাহাড়সম হয়ে আছে।
যার ফলে মানবেতর জীবনযাপন করা ব্যক্তিদের  মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। গত ১২ মাসে আমাদের সীমান্তে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইংলিশ চ্যানেলে প্রাণহানির ঘটনা অভাবনীয় স্তরে রয়েছে। “
মানবাধিকার গ্রুপের চিঠিতে মূল দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে: অবৈধ অভিবাসন আইন এবং জাতীয়তা ও বর্ডারস আইন বাতিল করে আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার অধিকারকে পুনরুদ্ধারকরণ।
যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রত্যাশী লোকদের যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর জন্য নিরাপদ রুটগুলি উন্মুক্ত করণ যাতে আশ্রয় প্রত্যাশী ব্যক্তিরা ইংলিশ চ্যানেলে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে বাধ্য না হয়। ভিসা রুটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা সহজ করণ। বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারকে পুনরায় একত্রিত হওয়ার সুযোগ প্রদান করা যাতে শরণার্থীরা তাদের পরিবারের সাথে পূর্ণমিলনের সুযোগ পায়।
পেনরিথ এবং ইডেন শরণার্থী নেটওয়ার্কের পরিচালক সারা উইলসন বলেন, ‘‘ শরণার্থীরা সর্বদা যুক্তরাজ্যের অংশ ছিল এবং আমরা আমাদের নতুন সরকারকে এই ঐতিহ্যটি পুনর্নির্মাণের দাবি জানাই। প্রতিকূল পরিবেশের কারণে অনেক আশ্রয়প্রার্থীর জীবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যারা যুক্তরাজ্যে জীবন বাঁচাতে আশ্রয়ের সন্ধান করছিল তাদের সাথে যুক্তরাজ্য সরকার যে আচরণ করেছে তার পরিবর্তনের সময় এসেছে।”
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ” সরকার এসাইলাম আবেদনকারীদের আশ্রয় ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকার চায় দ্রুততার সাথে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে।”
উল্লেখ্য যে, নিউজলেটারে আরো জানানো হয় আশ্রয়প্রার্থী যুক্তরাজ্যে আগমনের ছয় মাসের মধ্যে যেনো তাদের জীবন পুনর্নির্মাণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা যুক্তরাজ্য সরকারের গঠন করা উচিত। কারণ হিসাবে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে আশ্রয়প্রার্থী ১.২ বিলিয়ন অবদান রাখে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৯ জুলাই ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে প্রতি ৮ জনে ১জন ব্রিটিশ নাগরিক নিচ্ছে প্রাইভেট চিকিৎসাঃ গবেষণা

বাই টু লেট টপ স্লাইসিং

নিউজ ডেস্ক

ভাতিজিকে হত্যা করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিউজ ডেস্ক