6.6 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
Uncategorized

যুক্তরাজ্যে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে দায়ী সুপারমার্কেট

কোভিড-১৯ মহামারীকালীন সংকটের সময় মানুষের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সদাই ও পণ্যসামগ্রী পৌঁছতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য প্রশংসিত হয় যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেটগুলো। বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি, বাজার অস্থিরতা ও বৈশ্বিক মন্দার জের ধরে দাম বেড়ে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের। বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে সুপারমার্কেটগুলোও ভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে বাধ্য হচ্ছে। ব্রিটিশ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলা হয়েছে সুপারশপগুলো ক্রমেই জনশত্রুতে পরিণত হচ্ছে।

বেশ কয়েক দশক ধরে দেখা যায়নি, এমন হারে দাম বেড়ে গেছে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর। অসহায় ক্রেতারা তাই দোষারোপ করছেন সুপারশপগুলোকেই। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ক্রেতা ও কৃষকরা শীর্ষ সুপারমার্কেটগুলোকে মুনাফাখোর তকমা দিয়েছে। সুপারশপ মালিকদের অতিরিক্ত লোভের কারণে মূল্যস্ফীতির অভিযোগ করছেন তারা।

 

 

 

 

 

কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গম ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমার্কেট চেইন সেইন্সবারি। মঙ্গলবার রুটি ও মাখনের দাম ১০-৭৫ পেনি কমানো হয়। খুচরা পণ্যবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়ার তথ্যানুসারে, ১০-৭৫ পেনি মূল্যহ্রাসের পরও সেন্সবারির রুটির দাম এখনো ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২০ পেনির মতো বেশি রয়েছে। গমের পাইকারি মূল্য ইউক্রেন আক্রমণের আগের তুলনায় কমে যাওয়া সত্ত্বেও উচ্চমূল্যে রুটি বিক্রি করা হচ্ছে। তাই সুপারমার্কেটগুলো সত্যিকার অর্থে গ্রাহকের কাছ থেকে আগের পতিত মূল্যের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের নেতা এড ডেভি ‘লোভ মূল্যস্ফীতি’ সম্পর্কে সরকারি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো পরামর্শ দিয়েছেন যে খাদ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও সুপারমার্কেটগুলো তাদের নিজস্ব মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে মুল্যস্ফীতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

 

 

 

 

জ্বালানি থেকে শুরু করে গম পর্যন্ত সবকিছুর পাইকারি মূল্য গত বছরের তুলনায় অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় খাদ্যের দাম খুব ধীরগতিতে কমছে, আবার কিছুক্ষেত্রে ঊর্ধ্বমুখীও হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এডের মতো অনেকেই তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যের দাম কমতে শুরু করলেও চলতি বছরের মার্চ থেকে যুক্তারাজ্যে খাদ্যের দাম বেড়েছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ—বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস এ প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।

সরকারি সংস্থাটি গত মাসে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানায়, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের মূল্য কমলেও আমাদের সুপারমার্কেটগুলোয় এর প্রতিফলন অনুপস্থিত। এনভায়রনমেন্ট, ফুড অ্যান্ড রুরাল অ্যাফেয়ার্স (ইএফআরএ) কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পণ্যের দাম যুক্তিসংগতভাবে হ্রাস না করার জন্য তারা সুপারমার্কেট প্রধানদের তলব করতে পারে।

 

 

 

 

 

ইউক্রেন আক্রমণের পর জ্বালানির দাম বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে দাম পতনের পরও যুক্তরাজ্যের বাজারের দাম কমেনি। এ নিয়ে গত বছর মোটরচালক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে পেট্রল স্টেশনগুলোকে ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়। তবে সুপারমার্কেটগুলো নিজেদের রক্ষা করতে বলছে যে শুধু খাবারের মূল্যবৃদ্ধি নয়, তারা অতিরিক্ত মজুরি ও জ্বালানির ব্যয় বৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছে।

ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের (বিআরসি) পরিচালক অ্যান্ড্রু ওপি বলেছেন, জ্বালানি, পরিবহন ও শ্রমের উচ্চব্যয়ের পাশাপাশি খাদ্য প্রস্তুতকারক ও কৃষকদের দেয়া উচ্চমূল্যের কারণে গত বছর অনেক সুপারমার্কেটের মুনাফা কমেছে। ব্রিটিশ বহুজাতিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান টেসকোর মুনাফা ৫১ শতাংশ কমে ১০০ কোটি পাউন্ড ও সুপারমার্কেট চেইন আসডার মুনাফা এক-চতুর্থাংশ কমে ৪৪ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ডে নেমেছে।

গত বছর লোকসানের মুখোমুখি হয়েছে মরিসনসও। ৫ শতাংশ মুনাফা পতনের সম্মুখীন হয়েছে সেইন্সবারি। এর প্রধান নির্বাহী সাইমন রবার্টস দাবি করেছেন, ব্রিটেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমার্কেটটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও দাম যতটা সম্ভব কম রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

আরো পড়ুন

ছোট্টবেলার ঈদ

Face to Face with Dr Taj Hashmi

Expatriate Bangladeshi’s legal problem l বাংলাদেশে প্রবাসীদের আইনী সমস্যা