TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে বড় রদবদলঃ স্টারমারের দলে ব্লেয়ার আমলের অভিজ্ঞদের প্রত্যাবর্তন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ডাউনিং স্ট্রিটে বড় ধরনের রদবদল করেছেন। সংসদের ছুটি শেষে ফেরার আগেই সোমবার সকালে ঘোষিত এই পরিবর্তনে বিদায় নিয়েছেন কয়েকজন শীর্ষ উপদেষ্টা, আর নতুনভাবে যুক্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ কিছু মুখ। লক্ষ্য হলো—অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে গতি আনা এবং অর্থনৈতিক খাতে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তদারকি নিশ্চিত করা।

সবচেয়ে আলোচিত নিয়োগ হলো র‍্যাচেল রিভসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জোন্সকে প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব করা। কঠোর অর্থনৈতিক অবস্থানের জন্য পরিচিত হলেও তিনি সমাজমুখী রাজনীতির প্রবল সমর্থক। সরকারের নীতি ও বার্তা জনসমক্ষে তুলে ধরা এবং বিরোধী শক্তির মোকাবিলায় তিনি মুখ্য ভূমিকা রাখবেন।
সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি করেছে অ্যালানের নিয়োগ। ব্লেয়ার সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জনসংযোগ সংস্থা পোর্টল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা অ্যালান অতীতে কাজাখস্তান, রাশিয়া ও কাতারের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। সেই ইতিহাস ঘিরে সমালোচনা থাকলেও তাকে আবারও সরকারে নেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞতার কারণে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে দলে আনা হয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক উপ-গভর্নর শাফিককে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক স্থায়ী সচিব হিসেবে তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে আসন্ন লড়াইয়ের জন্য স্টারমার তাকে মূল ভরসা করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের কৌশলগত উপদেষ্টা ম্যাকসুইনি আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকছেন। তবে নীতি বাস্তবায়নের ধীর গতিতে অসন্তোষ থাকায় এবার সরকারে যুক্ত হচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্টেফ ড্রাইভার সামনের সারিতেই থাকবেন, যদিও অ্যালানের উত্থান নারী উপদেষ্টাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
নীতি প্রণয়নের দায়িত্বেও এসেছে পরিবর্তন। দীর্ঘদিনের নীতি প্রধান স্টুয়ার্ট ইনঘ্যাম এখন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ পরামর্শক হিসেবে সরাসরি কাজ করবেন। পুরো কাঠামোর রদবদলের নেপথ্যে রয়েছেন আলাকেসন, যিনি নীতি ও বাস্তবায়ন দু’য়ের দায়িত্বই সামলাবেন। অভিজ্ঞ উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েলকে অন্তর্ভুক্ত করার সাফল্যও এই পরিবর্তনে বড় প্রভাব ফেলেছে।
প্রভাবশালী উপদেষ্টা লেডি কেসিকে স্থায়ীভাবে টিমে যুক্ত করা হয়নি, তবে তাকে নতুন সামাজিক সেবা কাঠামো গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যার ফলাফল পেতে সময় লাগবে অন্তত দুই বছর।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর গণযোগাযোগ প্রধান ডয়েল কম সময়ের মধ্যেই বিদায় নিয়েছেন। এছাড়া লয়েড ও হেনরিকসন-বেল নতুন দায়িত্বে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এই রদবদল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, কিয়ার স্টারমার এখন প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ও অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে আরও সরাসরি ও কঠোর অবস্থান নিতে চাইছেন।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

যেসব দেশ নাগরিক ফেরত নেবে না, সেইসব দেশের  ভিসা স্থগিতের সম্ভাবনাঃ যুক্তরাজ্য

‘অ্যান্ড্রু সমস্যা’ সমাধানেই উইলিয়ামের রাজসিংহাসন আরোহণ সহজ হতে পারে

“রাজনীতির ধরন বদলাতে হবে”—লেবার পার্টিকে সতর্ক করলেন লুসি পাওয়েল