যুক্তরাজ্যের কঠোর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনার কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে আগমনে গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশেষত, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যে নিয়মটি কার্যকর হয় তারপর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে আগমনের চাহিদা নিম্নগামী হয়ে যায়। নতুন আইনানুযায়ী আন্তর্জাতিক স্নাতক এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা তাদের ডিপেন্ডেন্ট যুক্তরাজ্যে আনতে পারে না। যার ফলে নাইজেরিয়া এবং ভারতের মূল শিক্ষার্থীদের বাজারে যুক্তরাজ্যে আসার চাহিদা একদম নিম্নমুখী।
২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারি, মার্চ), যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের সর্বশেষ তথ্যমতে ৪০,৭০০ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে আসার আবেদন করেছেন। যেখানে ২০২৩ সালে ৭২,৮০০ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে আসার আবেদন করেছিল। শতকরা হিসাবে যা ২০২৩ সালের চেয়ে প্রায় ৪৪% কম আবেদন।
এই হার কমার প্রধান কারণ হিসাবে ডিপেন্ডেন্টের আবেদনের পরিমাণকে ধরা হয়েছে। ২০২৩ সালে মূল আবেদন করেছিল ৩৯,৯০০ জন শিক্ষার্থী যার সাথে ডিপেন্ডেন্ট আবেদন ছিল ৩২,৯০০ জন। ২০২৪ সালে সেখানে মূল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আবদন জমা পড়ে ৩৪,০০০ এবং ডিপেন্ডেন্ট মাত্র ৬,৭০০ জন।
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস একটি বিবৃতিতে জানায় ২০২৪ সালের মূল হিসাব বোঝা যাবে অগাস্ট কিংবা সেপ্টেম্বর মাস আসলে। কারণ অগাস্ট, সেপ্টেম্বর পিক টাইম স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের।
শিক্ষার্থীদের আবাসন সরবরাহকারী স্টুরেন্টস ডটকম জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সরকারী তথ্য অনুসারে, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আবেদন ইতিমধ্যে ২০২৩ সালের চেয়ে ১৩% হ্রাস পেয়েছে এবং নাইজেরিয়ান অ্যাপ্লিকেশন ৬৩.৫% হ্রাস পেয়েছে।
চার্টার্ড অ্যাসোসিয়েশন অফ বিজনেস স্কুলের চেয়ারম্যান এবং নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ বিজনেস অ্যান্ড ল’ এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট ম্যাকিনটোস বলেছেন, “ নতুন নিয়ম করার ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। যুক্তরাজ্যের অন্যতম সফল আমদানি খাতকে সরকারের অভিবাসন নীতি ক্ষতিগ্রস্ত করতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আগমন হ্রাস বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসকে সীমাবদ্ধ করবে। যার কারণে শুধু ব্যবসা বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা নয় শিক্ষকতা এবং গবেষণা প্রকল্পেও আঘাত হানবে। ”
উল্লেখ্য যে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইমিগ্রেশন হেলথ সারচার্জ ফি ৬৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। ইমিগ্রেশন হেলথ সারচার্জ ফি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭৭৬ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্রঃ আইসিইএফ মনিটর
এম.কে
১২ মে ২০২৪