ব্রিটেনে কঠিন হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম কানুন। যা নিয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের হাইয়ার এডুকেশনের প্রধান। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যোগদানকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো উচিত নাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তবে অনেক বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা বলেন, আসছে শরতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোর্স ভর্তির সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কারণে অনেক ঘরোয়া শিক্ষার্থী তাদের স্থান হারাতে পারে। একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী প্রায় ৫ গুণ বেশি টিউশন ফি প্রদান করেন ঘরোয়া শিক্ষার্থী হতে। এমন কিছু কোর্স রয়েছে যাতে ঘরোয়া শিক্ষার্থীরা পড়তে রাজি থাকে না, বিশ্ববিদ্যালয় সেইসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিতে পারেন।
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বলছে, মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশীয় শিক্ষার্থীদের হতে প্রাপ্ত টিউশন ফি বছরে ৯২৫০ পাউন্ড হতেও হ্রাস পেয়েছে। যার ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক টিউশন ফি’র উপর অনেকবেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
ইউসিএএসের প্রধান নির্বাহী ক্লেয়ার মার্চেন্ট সোমবার উচ্চশিক্ষা নীতি ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তিনি বলেন সরকারের বিভিন্ন কঠোর নীতিমালার কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা তাদের দিক পরিবর্তন করে ফেলতে পারে যা হবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর জন্য হতাশার।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিভাগের পরিচালক ড্যান বারক্রফ্ট বলেছেন, যুক্তরাজ্যে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় শিক্ষার্থীর জন্য তাদের প্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েকটি কোর্সে সীমিত জায়গা রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা এই বছর যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক বেশি আবেদন দেখতে পাচ্ছি যদিও আসন খুবই সীমিত। তাছাড়া আরো একটি এ-লেভেল পরীক্ষার ফল আসার দ্বারপ্রান্তে।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম কর্তৃক সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে গত বছর যুক্তরাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় যে টিউশন ফিস পেয়েছে তার মধ্যে ৫ ভাগের এক ভাগ এসেছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি মোট আয়ের এক তৃতীয়াংশ এসেছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিকট হতে।
যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্নাতক ডিগ্রির থেকে স্নাতকোত্তর কোর্সে বেশি আসেন। উচ্চশিক্ষা পরিসংখ্যান এজেন্সি অনুসারে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ২০২০-২১ সালে মোট শিক্ষার্থীর ২২% ছিল। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫.৭% স্নাতক এবং ৩৯.১% স্নাতকোত্তর কোর্সে এসেছিল।
ইউসিএএসের প্রধান নির্বাহী ক্লেয়ার মার্চেন্ট বলেন, “ যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে হবে। কারণ আমরা সচেতন যে আমরা এমন একটি বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করছি যেখানে শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার,কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে অধ্যয়নের জন্য আকৃষ্ট হয়।”
এম.কে
১৫ আগস্ট ২০২৩