যুক্তরাজ্যে হোম অফিসের হয়ে আশ্রয় আবেদন যাচাইয়ের কাজ করা এক সরকারি কর্মী একই সঙ্গে রিফর্ম ইউকে দলের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন—এমন তথ্য প্রকাশের পর শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
ডারহাম কাউন্টি কাউন্সিলের ক্রুক ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর পল বিন হোম অফিসে সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রতি চরমপন্থাবিরোধী সংগঠন হোপ নট হেট দাবি করেছে, পল বিনের নামে পরিচালিত একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য পোস্ট করা হয়েছে।
সেসব পোস্টে বলা হয়—কাউন্সিলর পল বিন স্যোশাল মিডিয়াতে লিখেছেন,
“আশ্রয়প্রার্থীদের ৯৭ শতাংশ মিথ্যা বলছে, আর মাত্র ৩ শতাংশ কোনোভাবে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। সূত্রঃ আমি। আন্দাজ করুন আমার কাজ কী।”
কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় অর্ধেক আশ্রয়প্রার্থী তাদের মামলায় জিতে যান এবং আপিলের মাধ্যমে আরও অনেকে আশ্রয় লাভ করেন। ফলে পল বিনের কথিত মন্তব্য ও সরকারি তথ্যের মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের বৈপরীত্য।
এ ঘটনায় ডারহাম কাউন্টি কাউন্সিলের বিরোধীদলীয় নেতা আমান্ডা হপগুড বলেন—
“এটা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন। হোম অফিস বিষয়টি তদন্ত করছে জেনে আমি সন্তুষ্ট।”
ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিস কোডে স্পষ্ট বলা আছে, সরকারি কর্মচারীদের রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকতে হবে এবং ব্যক্তিগত মতামত কোনোভাবেই তাদের কাজ বা সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারবে না।
পল বিন মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রিফর্ম ইউকের হয়ে জয়ী হয়ে ডারহাম কাউন্টি কাউন্সিলে প্রবেশ করেন। ওই নির্বাচনে ৬৫ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় রিফর্ম ইউকেই কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ নেয়, যা একসঙ্গে লেবার, কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, গ্রিন ও ইনডিপেনডেন্টদের আসনের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেন—
“সব সিভিল সার্ভেন্টকে সততা, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করতে হয়। কেউ যদি কোড ভঙ্গ করেন, তবে তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মাধ্যমে দেখা হবে এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পল বিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানা যায়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২৬ আগস্ট ২০২৫