6.6 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সীদের এক চতুর্থাংশের হাতে স্মার্টফোনঃ গবেষণা

যুক্তরাজ্যের পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সীদের প্রায় এক চতুর্থাংশের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। দেশটির যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অফকমের গবেষণায় এসব তথ্য জানা যায়।

অফকম বলছে, গত বছরে এই বয়সী শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের ন্যূনতম বয়স সীমা ১৩ বছর হওয়া সত্ত্বেও প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দুজন এই ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেন, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য তৈরি অভিভাবকের নিয়মগুলো ‘কার্যকরী’ হচ্ছে না। এই পরিসংখ্যান শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর আরও কিছু করার জন্য একটি ‘সতর্কবার্তা’।

গণমাধ্যম ও অনলাইনের সঙ্গে শিশুদের মিথস্ক্রিয়া নিয়ে প্রকাশিত বাৎসরিক গবেষণাপত্রে অফকম বলে, পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সীদের মধ্যে ম্যাসেজিং সেবা ব্যবহারের হার ৫৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৫ শতাংশ হয়েছে। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ থেকে ৩৮ শতাংশ হয়েছে। আর লাইভস্ট্রিম দেখার হার ৩৯ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে অনলাইনে গেমিং খেলার হার গত বছরের ৩৪ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ হয়েছে।

অফকমের গবেষণায় আরও দেখা যায়, বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর নিয়ম ভঙ্গ করেই যুক্তরাজ্যের শিশুরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। এসব শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরই বয়স ১৩ বছরের চেয়ে কম। বলে অনেক শিশু স্বীকার করে যে, নতুন অ্যাপ ও অনলাইন সেবা পাওয়া জন্য তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয়।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অফকমের অনলাইন সেফটি গ্রুপের মার্ক বানটিং বলেন, এই পরিসংখ্যান এই শিল্পের জন্য একটি সতর্কবার্তা। প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়মনীতি মেনে এগুলো ব্যবহার করছে শুধু তাদেরকেই হিসাবের আওতায় আনলে হবে না। যারা ইতিমধ্যে এসব মাধ্যম ব্যবহার করছে তাদেরও হিসাবের আওতায় নিয়ে সুরক্ষা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেক জনপ্রিয় অ্যাপের ন্যূনতম বয়সসীমার নিচেই থেকেই শিশুরা ব্যাপকভাবে অ্যাপগুলো ব্যবহার করছে ও কোম্পানিগুলো এখন শিশুদের নিরাপদ রাখার উদ্দেশ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতার অধীনে রয়েছে।’

অফকমের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারের হার ২০২২ সালের ৩০ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে এসে ৩৮ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশ, টিকটকে ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ ও ইনস্টাগ্রামে ১৪ থেকে ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতো স্মার্টফোনে ব্যবহারের জন্যও ন্যূনতম বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ায় দাবি করেন বিভিন্ন বিশ্লেষক। তবে শিশুরা যেসব ডিভাইস ব্যবহার করে সেগুলো বেশির ভাগই তাদের অভিভাবদের। কারণ ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশিভাগেরই ফোন কেনার চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করার অনুমতি নেই ও বড় কোম্পানিগুলোও ১৬ বছর কম বয়সীদের কাছে অনলাইনে ফোন বিক্রি করে না। যোগাযোগ ও তাদের অবস্থান জানার স্বার্থেই অনেক অভিভাবক শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেন।

অফকমের মতে, মাত্র এক শতাংশ অভিভাবকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ন্যূনতম বয়স সম্পর্কে জানে। অভিভাবকেরা শিশুদের উপর বেশি নিয়মও চাপিয়ে দিতে আগ্রহী নয়।

অ্যাপগুলো ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত ন্যূনতম বয়সের সীমা জেনেও প্রতি দশজনের মধ্যে তিনজন অভিভাবক পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট রাখতে চান। আর এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলে, ৯ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষতিকর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হতে দেখা গিয়েছে। এসব প্রতিরোধে আরও জোরালো পদক্ষেপ প্রয়োজন।

অ্যাপ স্টোরে অ্যাপ ডাউনলোডের সময় ব্যবহারকারীদের বয়স পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দেয় মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে হোমঅফিসের কর্মী ছাটাই নিয়ে গোপন নথি ফাঁস

আমেরিকান সিক্রেট এজেন্টের কারণে যুক্তরাজ্যের এক নার্সের জীবন ঝুঁকির মুখে

বেতন বৃদ্ধির পরেও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে তাল মিলাতে ব্যর্থ ব্রিটিশ জনগণ