ব্র্যাডফোর্ডে হিজ ম্যাজেস্টিস রেভিনিউ অ্যান্ড কাস্টমস (HMRC)-এ কার্যরত এক কর্মকর্তা সরকারি কর ব্যবস্থায় জালিয়াতির মাধ্যমে £২১১,০০০-এর বেশি অর্থ আত্মসাৎ করায় তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্টে শুনানির সময় বিচারক রজার থমাস কে.সি এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৬ বছর বয়সী মোহাম্মদ দার, ব্র্যাডফোর্ডের লিস্টারহিলস এলাকার বাসিন্দা, HMRC-এ ২০১৬ সালে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত কর বিভাগে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুবাদে তিনি করদাতাদের রেকর্ড এবং ফেরত প্রদান ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পান। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ভুয়া কাগজ দিয়ে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ তুলে নিতেন।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় তিন বছর সময় ধরে মোহাম্মদ দার অনুমতি ছাড়া অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে প্রবেশ করে করদাতাদের ১০১টি রেকর্ড জালিয়াতি করেন এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে ভুয়া ফেরতের আবেদন জমা দেন। ফেরতের অর্থ পাঠানো হয় মোট ৬৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল তার নিজের বা তার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যক্তিদের।
তদন্তে জানা যায়, প্রতারণার অর্থ গোপন করতে মোহাম্মদ দার মানি লন্ডারিংয়ের জন্য মোসা হাজাত এবং আরসলান আহমেদ নামে দুই ব্যক্তির সাহায্য নেন। হাজাত নিজের অ্যাকাউন্টে পাঁচটি ভুয়া ফেরতসহ £৯,৮৯৫.৬৭ এবং আহমেদ তিনটি ফেরতসহ £৬,০১২.১৩ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তারা অর্থ মোহাম্মদ দারের কাছে ফিরিয়ে দেন এবং বিনিময়ে কমিশন গ্রহণ করেন।
প্রতারণা উদঘাটিত হয় যখন এক করদাতা তাদের নামে করা একটি আয়কর রিটার্ন দাবি সম্পর্কে HMRC-এ অভিযোগ করেন। তদন্তে মোহাম্মদ দারের পি,আই,ডি নম্বরের মাধ্যমে তার সংশ্লিষ্টতা চিহ্নিত হয়, এবং বিস্তৃত মূল্যায়নে পুরো জালিয়াতি প্রকাশ পায়।
আদালতে মোহাম্মদ দার প্রতারণা, দায়িত্বের অপব্যবহার, অননুমোদিত কম্পিউটার ব্যবহারের অপরাধ এবং দুই সহযোগীকে সাথে নিয়ে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করেন। তার আইনজীবী জানান, তিনি জুয়া ও মাদকে আসক্ত ছিলেন এবং বিবাহসংক্রান্ত ঋণ তাকে এই অপরাধে প্ররোচিত করেছিল।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, “এটি ছিল পরিকল্পিত, দীর্ঘমেয়াদি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারমূলক প্রতারণা। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ আপনি বারবার ব্যবহার করেছেন। এমন অপরাধের ক্ষেত্রে কারাদণ্ড ছাড়া বিকল্প নেই।”
সহ-অভিযুক্ত হাজাত এবং আহমেদকে ১২ মাসের কমিউনিটি অর্ডার এবং ১৮০ ঘণ্টা বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের ২১ মে ‘প্রোসিডস অব ক্রাইম’ আইন অনুযায়ী আরও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
ঘটনার পর HMRC-এর অ্যান্টি-করাপশন বিভাগের প্রধান বেন রোলিন্স বলেন, “এই প্রতারণা ছিল সরকারি দায়িত্ব ও জনবিশ্বাসের লঙ্ঘন। আমরা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং প্রতিষ্ঠানের সততা রক্ষায় কঠোরভাবে কাজ করে যাব।”
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে

