4.2 C
London
March 19, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

রিফর্ম পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে নতুন টানাপোড়েন

নাইজেল ফারাজ তার দল রিফর্ম ইউকে-কে একটি ক্ষতিকর বিভক্তি থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছেন বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা যায়। তথ্যমতে জানা যায় দলীয় এমপি রুপার্ট লোরের বরখাস্ত হওয়া নিয়ে রিফর্ম ইউকে পার্টির মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি। এরই মধ্যে নাইজাল ফারাজ ২৯ জন কাউন্সিলরের নাম ঘোষণা করেছেন যারা তার দলে যোগ দিয়েছেন।

তবে রিফর্ম ইউকে নেতা ফারাজ এটিও স্বীকার করেছেন যে, সম্প্রতি রিফর্মের চেয়ারম্যান জিয়া ইউসুফকে লক্ষ্য করে ‘অনলাইন অপব্যবহার’ এবং ‘প্রকাশ্য বর্ণবাদ’ চালানো হয়েছে, যা লোরের বরখাস্তকে ঘিরে দলের ভেতরে দ্বন্দ্বকে আরও উসকে দিয়েছে।

নতুন রিফর্ম কাউন্সিলরদের এক অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে ফারাজ বলেন, তার দলকে ‘পুরনো অভিজ্ঞ’ লোকদের প্রয়োজন— যার মধ্যে ১৫ জন কনজারভেটিভ পার্টি ছেড়ে আসা কাউন্সিলর, একজন লিবারেল ডেমোক্র্যাট থেকে আসা এবং কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও, চেশায়ারের এক কাউন্সিলর দলে যোগ দিয়েছেন, যিনি আগে লেবার পার্টি ছেড়েছিলেন ট্রান্সজেন্ডার নীতির বিতর্কের কারণে।

এক বক্তৃতায় ফারাজ স্বীকার করেন যে, লোরের সাথে বিরোধ কিছুটা ‘উদ্বেগজনক’ ছিল, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই অসন্তোষ ‘প্রান্তিক’ পর্যায়ে রয়েছে। তিনি আরও জানান, এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে একজন ব্যারিস্টারের তদন্ত প্রতিবেদন এই সপ্তাহেই শেষ হতে পারে।

ফারাজ বলেন, “আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে আমরা কিছুটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছি। আমরা আমাদের এক এমপির আচরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম, এবং যখন জানতে পারলাম তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তখন আমরা ভেবেছিলাম, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হোক এবং সত্য জানা যাক।”

যখন ইউসুফকে ঘিরে বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়— তখন ফারাজ বলেন, ইউসুফের বিরুদ্ধে হওয়া মন্তব্যগুলোর মধ্যে এবং অন্য রিফর্ম এমপি লি অ্যান্ডারসনের লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের বিরুদ্ধে দেওয়া মন্তব্যগুলোর মধ্যে ‘আকাশ-পাতাল পার্থক্য’ রয়েছে।

লি অ্যান্ডারসন ২০২৪ সালে রিফর্ম ইউকে-তে যোগ দেন।  তাকে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে বরখাস্ত করা হয় সাদিক খান সম্পর্কে তার মন্তব্যের কারণে, যা ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে নিন্দিত হয়েছিল।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, রিফর্ম ইউকের সদস্যদের পরিচালিত ফেসবুক গ্রুপগুলোতে ইউসুফের সমালোচনা করা হয় এবং সেখানে তার মুসলিম পরিচয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।

রিফর্ম ইউকের সদস্যরা ইউসুফের বিরুদ্ধে অপব্যবহারের জন্য দায়ী কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারাজ বলেন, “আমি মনে করি না যে অনলাইনে হওয়া এই মন্তব্যগুলো সরাসরি রিফর্ম ইউকের সদস্যদের কাছ থেকে এসেছে। বরং, এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা। যেখানে মানুষ  কটূক্তি করছে। আমি এটি পছন্দ করি না।

আমি সবসময়ই বলেছি, যে দলই আমি পরিচালনা করি তা হবে বর্ণবাদমুক্ত এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত। আমি এ বিষয়ে কঠোর ছিলাম, এবং ভবিষ্যতেও কঠোর থাকব।”

গত দুই সপ্তাহ ধরে রিফর্ম ইউকে পার্টি অভ্যন্তরীণ সংকটে রয়েছে, কারণ ফারাজ ও লোরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। লোরকে দলে অভ্যন্তরীণ বুলিং সংক্রান্ত অভিযোগের কারণে বহিষ্কার করা হয় এবং পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। লোর ডেইলি মেইল-এর এক সাক্ষাৎকারে ফারাজের সমালোচনা করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে, অভিবাসন ইস্যুতে তার মতামত প্রকাশ করতে দল তাকে বাধা দিয়েছে।

৬৭ বছর বয়সী লোর দাবি করেছেন, তাকে বরখাস্ত হওয়ার পেছনে ফারাজের সমালোচনা করাই মূল কারণ ছিল।

লোরের সমর্থকরা দল ছাড়ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইয়র্কশায়ারের কাউন্সিলর মারিয়া বোউটেল, যিনি রবিবার ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হিসেবে তার মেয়াদ পূর্ণ করবেন।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১৮ মার্চ ২০২৫

আরো পড়ুন

অনলাইনে শুক্রাণু কিনে ইউটিউব দেখে জন্ম নিলো “ই-বেবি”

বাকি যুক্তরাজ্য থেকে লন্ডনকে বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে!

নিউজ ডেস্ক

ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ ‘পাগলামি’ :বরিস জনসন